ঝালকাঠির রাজাপুরের গালুয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (গালুয়া স্কুল) হামলা ভাঙচুর, দুই শিক্ষককে মারধর ও জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক গালুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ জিয়া উদ্দিন রেজবির বিরুদ্ধে। রোববার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে ১০টার দিকে তুচ্ছ ঘটনার জেরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা রাজাপুর-ভান্ডারিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। বিচার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে শিক্ষক ও পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হওয়া গালুয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে জানান, অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, সাবেক গালুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগ সদস্য সৈয়দ জিয়া উদ্দিন রেজবির ছেলে ওই স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র রাফিম আহম্মেদ তামিমের সঙ্গে স্থানীয় শরীফের ছেলে নাদিমের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিজবী স্কুলে এসে মৌখিক অভিযোগ করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরমার্শ দেন এবং বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। এ নিয়ে স্কুলের সভাপতির সাথে আলাপ ও উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার প্রস্তুতি চলছিল।
এ শিক্ষক আরও অভিযোগ করেন, রোববার সকালে হঠাৎ ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সৈয়দ জিয়া উদ্দিন রেজবির নেতৃত্বে লাঠিসোটা নিয়ে এসে স্কুলে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর করা হয় এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান ও কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাইনুল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ছাড়াও স্কুলের জাতীয় পতাকা খুলে ছিঁড়ে বাথরুমের পাশে ফেলে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি গালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক কামালের সাথে আলোচনা করে থানায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
যুবলীগ নেতা সৈয়দ জিয়া উদ্দিন রেজবি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ছেলে তামিমকে রোববার সকালে স্কুলে আসার পথে নাদিমসহ কয়েকজন মিলে কুপিয়ে জখম করেছে, সে বর্তমানে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি। জখমী ছেলেকে নিয়ে সকালে থানায় গিয়ে মামলা করবো এই ভেবে প্রতিপক্ষরা স্কুলে নাটক সাজিয়ে উল্টো তাকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করছে। তিনি তার ছেলের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন। এর আগেও কয়েক বার তার ছেলেকে মারধর করলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বার বার জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে হামলাকারীদের পক্ষাবলম্বন করেন বলে অভিযোগ রিজবীর।
রাজাপুর থানার এসআই মো. শাহজাদা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে এবং শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।