কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হাওর অধ্যুষিত মাইজচর ইউনিয়নের বাহেরবালী এসইএসডিপি (সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট) মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যক্তিগত রেষারেষির জের ধরে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষককে তিনি সাময়িক বরখাস্তও করেন। এ অবস্থায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ভেঙে দিয়ে কমিটি পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নতির লক্ষ্যে পরিচালনা কমিটি কোনো কাজই করছে না। তাই এ কমিটি ভেঙে দেয়া হবে।’
প্রধান শিক্ষক এম এ কাসেম জানান, তিনি হাওরের অবহেলিত এ স্কুলটি টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। স্কুলটির সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে স্কুলটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখানো হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর জেলার মিঠামইনে হামিদপল্লীতে (রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে প্রতিষ্ঠিত) ‘ইত্যাদি’ ধারণের দিন এর উপস্থাপক হানিফ সংকেত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে কেয়া কসমেটিকসের সৌজন্যে স্কুলের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষকের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী দুই লাখ টাকার অনুদান দেন। তা ছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর স্কুল মেরামতের জন্য দেড় লাখ এবং বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. যুবায়ের এক লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁর এসব কর্মকাণ্ড ভালো চোখে দেখেননি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুল বাছির মিয়া। এ জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে দুই দফায় তাঁর বিরুদ্ধে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ আনেন। অথচ প্রতিটি খরচের বিল-ভাউচার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাঁর হাতে রয়েছে।
তবে স্কুল কমিটির সভাপতি মো. আবদুল বাছির মিয়া বলেন, ‘স্কুলের তহবিলের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা কারণে প্রধান শিক্ষককে কয়েক দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও তিনি হিসাব দিতে পারেননি। যথাসময়ে নোটিশের জবাবও দেননি। এসব কারণে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’ এ সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক বলেন, যথাসময়ে তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা গোপন রাখা হয়।
প্রসঙ্গত, সরকারের এসইএসডিপির আওতায় শিক্ষায় অনগ্রসর হাওরবাসীর জন্য ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৩০০ শিক্ষার্থীর এ স্কুলে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ৯ জন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী রয়েছেন।