স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অর্থকষ্টে মহাসংকটে অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অর্থকষ্টে মহাসংকটে অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষকরা

অধ্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার |

প্রতিদিন অবস্থার অবনতি হতে হতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে মানবজাতি। আমরাও যুদ্ধ করছি বেঁচে থাকার জন্য। প্রতি মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে, সাথে সাথে মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষের নাম। বৈশ্বিক এ মহাদুর্যোগে সকল পেশার সকল শ্রেণির মানুষ মহাসংকটে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। করোনার মহাআতঙ্কে একদিকে মানুষ বাঁচার জন্য গৃহে অবস্থান করছেন, অন্যদিকে আর্থিক সংকটের মুখে কেউ কেউ হতাশায় নিমজ্জিত; আবার কেউ কেউ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সবচেয়ে বেশি সংকটে আছেন অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এককালীন আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন। এখানে বলে রাখা ভালো, সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো মাসিক পেনশন পান না বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা শুধু এককালীন কিছু টাকা পান। কিন্তু এই টাকা পেতে লেগে যায় বছরের পর বছর। অনেক শিক্ষক বয়সের ভারে জীবন সায়াহ্নে এসে রোগে-শোকে অর্থাভাবে কঠিন সময়ের সম্মুখীন হন। কেউ কেউ টাকা না পেয়ে করুণ পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরপারে পাড়ি জমান। 

এখন প্রেক্ষাপট আরও কঠিন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরও কঠিন করে দিয়েছে। ষাটোর্ধ্ব এ জনগোষ্ঠী মারাত্মক জীবনঝুঁকিতে আছেন এবং সাথে সাথে লড়তে হচ্ছে জীবিকা অন্বেষণে, বাঁচার তাগিদে। এমনিতেই অবসরকালীন টাকা পেতে ২ থেকে ৪ বছর লাগে, এখন তো পরিস্থিতি আরও খারাপ। থেমে গেছে টাকা দেয়ার প্রক্রিয়া। কর্মকর্তাদের অনেকে অসুস্থ ও বয়স্ক। অফিস স্থবির প্রায়। অন্যরাও আতঙ্কে আছেন স্বাস্থ্যঝুঁকির বাস্তবতায়। ফলে অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত হয়েছে এই অসহায় মানুষদের ভাগ্যাকাশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ১ লাখ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। সকল শ্রেণির মানুষ এই সহায়তার আওতায় আসবে, এমন ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।

আমি যতদূর জানি, অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে ৪০ হাজারের মতো আবেদন পড়ে আছে। এগুলো পড়ে থাকার মূল কারণ হচ্ছে অর্থসংকট এবং বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি। এর আগে এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ৪ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়া হয় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে। সর্বমোট ১০ শতাংশ কর্তন করা হয় এখন।

দেখা যাচ্ছে, এই কর্তনের টাকা ও সরকারি বরাদ্দ মিলিয়েও সময় মতো টাকা প্রদান করতে পারেন না কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ সরকারি বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। তবে আমি এসব পরিসংখ্যানের জন্য এ লেখা লিখছি না।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যারা এখন বেঁচে থাকার জন্য, জীবনযুদ্ধে প্রতীক্ষায় আছেন টাকা পেতে, আমি তাদের কথা বলছি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সহায়তার আওতায় এখনো পড়েনি। তবে তাদের অবসরের টাকা পেলেই বাড়তি কোনো আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হবে না, আমি মনে করি।

তাই এই সিনিয়র সিটিজেনদের অবসরকালীন সমুদয় টাকা অতি দ্রুত প্রদান করার আবেদন করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি সবিনয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ও আর্থিক সংকটে থাকা এই ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা ও হতাশামুক্ত করতে জরুরি ভিত্তিতে তাদের অবসরের টাকা প্রদানের সুব্যবস্থা করা হোক।

লেখক : অধ্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার, সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।

স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043139457702637