সড়কে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু আর কত? - Dainikshiksha

সড়কে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু আর কত?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সম্প্রতিকালে সড়ক দুর্ঘটনায় বহু শিক্ষার্থীর হতাহতের খবর পাওয়া যাইতেছে। স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরিহিত ছাত্র-ছাত্রীরা যখন নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে বা তাহার আশেপাশের সড়কে চলাচল করিতেছে, তখনও বিভিন্ন যানবাহনের চালককে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাইতে দেখা যাইতেছে। গত বৎসর রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনে ওভারটেকিংয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকা বাসের চাপায় সেই কলেজের দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হইলে সারাদেশে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ ছড়াইয়া পড়ে। কয়েকদিন ধরিয়া চলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলন।

অতঃপর সরকার নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা আর পরিবহন খাতের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের নানামুখী দাবির দ্রুত ও আইনানুগ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলে সেই আন্দোলন একসময় স্তিমিত হয়। কিন্তু সেই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হইতে আমরা কেহই শিক্ষা গ্রহণ করি নাই। সড়কে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার দাবিতে যখন স্কুলপড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভে নামিয়া আসে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সেই দেশের সড়ক পরিবহন খাতের অবস্থা কতটা নাজুক তাহা উপলব্ধি করিতে আমাদের মোটেও বেগ পাইতে হয় না।

এই সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর হইল, গত বুধবার সকালে বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কে পশ্চিম নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হইয়াছে। সে নিজ বিদ্যালয়ে যাইবার জন্য সেই সড়কটি অতিক্রম করিতেছিল। কিন্তু একটি বাস তাহাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তাহার মৃত্যু হয়। তাহার এই মৃত্যুর সংবাদ পাইয়া স্থানীয় লোকজন লাঠিসোটা নিয়া ও রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলিয়া কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করিয়া রাখে। এইভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর এক শিক্ষার্থী নিহত হইতেছে, কিন্তু তাহার কোনো প্রতিকার মিলিতেছে না।

বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। রাজধানীতে গত মাসে প্রগতি সরণিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর একজন শিক্ষার্থী জেব্রাক্রসিংয়ে নিহত হইলে তাহা লইয়াও শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামিয়া পড়ে। তাহারও আগে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোনের একজন শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হইলে তাহার সহপাঠীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশ নেয়। কিন্তু তাহার পরও সড়কে শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা বন্ধ হইতেছে না।

বাংলাদেশে যেইসব কারণে এই সমস্যার কার্যকর সমাধান মিলিতেছে না তাহা হইল— চালকদের লাইসেন্স না থাকা ও লাইসেন্স তৈরির প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব, ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়নে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা, রোড ইঞ্জিনিয়ারিং ও সাইন-সিম্বলের অভাব, পর্যাপ্ত ফুটপাত ও ফুটওভারব্রিজ না থাকা, বেপরোয়া ও বিপজ্জনক ড্রাইভিংয়ের উপযুক্ত শাস্তির বিধান না থাকা, সর্বোপরি জনসচেতনতার অভাব। তবে শিক্ষার্থীদের সড়ক দুর্ঘটনায় নিপতিত হইবার জন্য দায়ী চালকের বেপরোয়া মনোভাবের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কিছু দায়িত্বহীনতা।

আমরা জানি, পৃথিবীর সব দেশেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম-কানুন বাঁধিয়া দেওয়া হয় যাহাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করিতে পারে। এই জন্য রাস্তায় ব্যারিকেড বা স্পিড ব্রেকার দেওয়া হয়। গাড়ির গতিসীমা নির্ধারণ করিয়া দেওয়া হয়। এই ব্যাপারে চালকগণ যেমন সতর্ক থাকেন, তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনে লোক রাখিয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করেন। কিন্তু আমরা এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। শিক্ষার্থীদের সড়কে দুর্ঘটনা এড়াইতে চালক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনের সচেতনতা ও সক্রিয়তা সবচাইতে জরুরি।

সূত্র: ইত্তেফাক

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030701160430908