হল থেকে বের করে জেএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটাল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা - দৈনিকশিক্ষা

হল থেকে বের করে জেএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটাল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাউফলে এক জেএসসি পরীক্ষার্থীকে কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তার স্ত্রী। বৃহস্পতিবার কালিশুরী সায়েদুল আরেফিন ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই পরীক্ষার্থীর নাম আদিল রাড়ী। আদিল ওই কেন্দ্রের অধীনে ১২ নম্বর কালিশুরী সরকারি প্রাইমারি স্কুল ভেন্যু থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আদিল রাড়ী গণিত পরীক্ষা দেয়ার জন্য কেন্দ্রে আসেন। তার কক্ষ নম্বর ছিল চার। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে আরিফুল ইসলাম আবির নামের অপর এক পরীক্ষার্থীর বাবা ও কালিশুরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মৃধা ও তার স্ত্রীসহ ১৫/২০ লোক ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করে চার নম্বর কক্ষ থেকে আদিল রাড়ীকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পড়, কিলঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে কাঠের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ঘটনাটি দেখলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। ঘটনার সময় পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মাহবুব রহমান ও ইউএনওর প্রতিনিধি তরিকুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও তারা কেউই এগিয়ে আসেনি। বরং একটি শিশু পরীক্ষার্থীকে নির্দয়ভাবে মারধরের দৃশ্য দেখে ওই কেন্দ্রের নিকটবর্তী কালিশুরী প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে তার স্কুলের লাইব্রেরি রুমে নিয়ে যান।

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, তখন শিশুটির গায়ে থাকা শার্টে রক্তের দাগ ছিল। চোখমুখ ফুলা ও গলার নিচে আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাইব্রেরি রুমে নিয়ে অন্যান্য শিক্ষকের সহায়তায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তখন শিশুটি ভয়ে কাঁপছিলেন। এরপর সাড়ে ৯টার দিকে তিনি নিজে শিশুটিকে পরীক্ষা কক্ষে দিয়ে আসেন।

হামলার শিকার পরীক্ষার্থী আদিল রাড়ী বলেন, আল আমিন মৃধা সামনে থেকে আমার দুই হাত ধরে রাখেন, আর তার স্ত্রী কাঠের চলা দিয়ে নির্মমভাবে আমাকে পেটায়। এ ছাড়া আল আমিন মৃধার সঙ্গে থাকা ১৫/২০ জন আমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারেন। আদিল আরও বলেন, আমার সঙ্গে আল আমিন মৃধার ছেলে পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম আবিরের কোনো পূর্ব বিরোধ নেই। তবে তানজিল নামের তার স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। তানজিল ভাই আমার ঘনিষ্ট। ওই সময় তিনি আমার সঙ্গে ছিল। তাকে মারতে এসে না পেয়ে আমাকে বেধরক মারধর করেছেন।

আহত পরীক্ষার্থী আদিলের মা নিলুফা বেগম জানান, তার ছেলের সমস্ত শরীরের আঘাতের চিহ্ন। তিনি খবর শুনে ছেলেকে দেখার জন্য হলের মধ্যে যেতে চাইলে তাকে যেতে দেয়া হয়নি। পুলিশ তাকে বাধা দিয়েছে।

এখবর পেয়ে বাউফল থেকে দৈনিক জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরুজ্জামান বাচ্চু ও প্রথম আলোর প্রতিনিধি এবিএম মিজানুর রহমান কালিশুরী সায়েদুল আরেফিন ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে প্রথমে পুলিশ ও পরে ইউএনওর প্রতিনিধি তরিকুল ইসলাম তাদেরকে বাধা দেন। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরেও তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

এসময় ঘটনটি ইউএনও পিজুস চন্দ্র দেকে অবহিত করা হলে তার নির্দেশে ওই দুই সাংবাদিককে সচিবের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কেন্দ্র সচিব প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই সময় তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন না।

ঘটনার সাথে জড়িত অভিভাবক ও কালিশুরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মৃধা বলেন, আমার ছেলেকে চড়থাপ্পড় মারার খবর পেয়ে আমি পরীক্ষার হলে যাই। কিন্তু কোনো পরীক্ষার্থীকে মারধর করিনি। এ ব্যাপারে বাউফলের ইউএনও পিজুস চন্দ্র দে বলেন, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, হামলার শিকার জেএসসি পরীক্ষার্থী আদিল রাড়ী ও তার মা নিলুফা বেগম স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মৃধার ভয়ে গ্রামের বাড়ি পোনাহুরা থেকে ঢাকার উদ্দেশে চলে গেছেন।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003425121307373