হল প্রাধ্যাক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় ভোগান্তিতে জাবি শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

হল প্রাধ্যাক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় ভোগান্তিতে জাবি শিক্ষার্থীরা

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম বরকত হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক আলী আজম তালুকদারের একের পর এক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। এসব অনিয়ম নিয়ে মুখ খুললে নানাভাবে হেনস্তা হতে হয় শিক্ষার্থীদের। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কর্মচারীদের দিয়ে জোরপূর্বক হলের অভ্যন্তরে ছাগল পালনে বাধ্য করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন হলের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।

জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে পরেরদিন বেলা ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। স্বল্পমেয়াদি ছুটির অনুমান করে অনেক শিক্ষার্থী প্রয়াজনীয় জিনিসপত্র হলে রেখে যায় । তবে ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়তে থাকলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে হলে আসেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলে প্রবেশের মৌখিক অনুমতি থাকলেও অধ্যাপক আলী আজম নিজের মন মত নানা নিয়ম তৈরি করে শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাঁধা দিচ্ছেন বলে অভিযাগ শিক্ষার্থীদের।

৪৩ ব্যাচের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘পড়াশুনার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি মেসে উঠেছি। সেখানে অবস্থানের জন্য আমার বেডিং ও প্রয়াজনীয় বই-খাতা নিতে হলে প্রবেশ করতে চাইলে প্রাধ্যাক্ষ আলী আজম তালুকদার আমাকে সকল আসবাবপত্র নিয়ে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন কিন্তু আমার এখনও পরীক্ষাই শেষ হয়নি।

৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাঈম বলেন, রোববার এবং বুধবার অফিস চলাকালীন সময়ে খাতায় নাম এন্ট্রি করে হলে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট কাজে হল অফিসে যেতে চাইলে আমাকে বাঁধা দেয় দায়িত্বে থাকা গার্ড সদস্যরা। হলে প্রবেশ করতে চাইলে প্রভোস্টের অনুমতি নিতে হবে জানালে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে না পেয়ে ফিরে আসতে হল আমাকে।

এদিকে এই অধ্যাপকর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, রাস্তা মেরামতের টাকা লোপাট, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাস সার্বক্ষণিক ব্যবহার, বৃক্ষ কর্তন, বাসা মেরামতের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ অপচয়, কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়া, অনুমতি না নিয়ে পরিবহন অফিসের ইট হলের কাজে ব্যবহারের অভিযাগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব অভিযোগের খবর গণমাধ্যমের শিরোনাম হলে ও অদৃশ্য কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের মত আর্থিক সংশ্লিষ্ট একাধিক কমিটিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এদিক লকডাউনের শুরুতে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ত্যাগ করলে ফাঁকা হলের ভেতর ছাগল পালন শুরু করেন এই প্রাধ্যক্ষ। এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে আসলে ব্যাপক সমালোচনার মুখ পড়েন তিনি। এনিয়ে একাধিক জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধ্যাপক আজমের বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ইমেজ সংকটে পড়ে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। এমতাবস্থায় তারা অধ্যাপক আজমকে অপসারণের জন্য উপাচার্যকে আল্টিমেটাম দেন। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম তার বিষয়ে উপযুক্ত সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই অধ্যাপক আজমকে স্বপদে বহাল রেখে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেন উপাচার্য।

পরিবহন অফিস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ করোনার এই সময়ে ফাঁকা ক্যাম্পাসকে কাজে লাগিয় অধ্যাপক আলী আজম নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিবহন অফিসের ইট হলের নির্মাণ কাজের জন্য নিয়ে যান। এবং সেই ইট বহনে ব্যবহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাশবাহী গাড়ি। এসব ইট হলটির অফিস নির্মাণ কাজে ব্যবহার করে কন্ট্রাক্টরের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযাগ আছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আলী আজম বলেন, ‘আমরা ৪২ ব্যাচের ছাত্রদের হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেছি কিন্তু ৪৩ ব্যাচের কাউকে এমন কথা বলিনি । বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর তারা পুনরায় আবাসিক হলে উঠতে পারবে। এছাড়া কন্ট্রাক্টরের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ পুরাপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।’

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035810470581055