হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের | কলেজ নিউজ

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলার মধ্য দিয়ে ১৮৩ বছরে পদার্পণ করলো উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐহিত্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কলেজের বর্তমান ও সাবেক ছাত্র-শিক্ষকের অংশগ্রহণে বর্ণিল শোভাযাত্রার আয়ো

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলার মধ্য দিয়ে ১৮৩ বছরে পদার্পণ করলো উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐহিত্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কলেজের বর্তমান ও সাবেক ছাত্র-শিক্ষকের অংশগ্রহণে বর্ণিল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। হাজারো সাবেক-বর্তমান ছাত্র শিক্ষকদের সঙ্গে এ শোভাযাত্রায় যোগ দেন। 

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

সোমবার খুব সকাল থেকেই কলেজ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। সুজ্জিত ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক অনন্য মিলনমেলায়। সকাল পৌনে নয়টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়। এক এক করে প্রতিটি বিভাগ নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে সমেবেত হতে থাকে। ব্যান্ডের তালে তালে নেঁচে-গেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শুরু করেন।

সকাল দশটার দিকে ক্যাম্পাসে এসে উপস্থিত হন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার মধ্যমণি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি এ কলেজের শিক্ষক, উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ পদে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ, সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোয়াজ্জম হোসেন মোল্লাহ্, সাবেক উপাধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদারসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি জাতীয় পতাকা ও কলেজের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোয়াজ্জম হোসেন মোল্লাহ্ ও সাবেক উপাধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেনও অন্যতম প্রাচীন ও ঐহিত্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র।  

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

এরপর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। কলেজের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস স্মরণ করতে গিয়ে ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে যেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সে গল্প সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের শোনান এ শিক্ষক।

 

তিনি বলেন, ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় তখন সরকার বলেছিলো আরো দুই-তিন বছর লাগবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য। তখন ঢাকা কলেজ বলেছিলো, আমরা আমাদের সমস্ত কিছু দিয়ে দেবো। বর্তমান কার্জন হল ছিলো ঢাকা কলেজের। কার্জন হল, এর পেছনের পুকুর, শহিদুল্লাহ হল, অধ্যাপকদের চারটি বাসা এ সব ঢাকা কলেজের ছিলো। ঢাকা কলেজ সে সব কিছু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে দিয়েছিলো। ঢাকা কলেজ শুধু তার অবকাঠামো নয়, তৎকালীন ক্যামেস্ট্রি ল্যাবের যে যন্ত্রপাতি সেগুলোসহ রীতিমত টেবিল চেয়ার দিয়ে এসেছিলো। কিছু কিছু শিক্ষকদেরও দিয়ে এসোছিলো যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম তাড়াতাড়ি শুরু হয়। তাই ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম হয়। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যের শেষাংশে তাঁর কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে হাজারো ছাত্র-শিক্ষক তার সঙ্গে স্লোগান দেন, ‘ইস্ট অর ওয়েস্ট, ঢাকা কলেজ ইজ দ্যা বেস্ট’।    

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে সুজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি প্রধান অতিথি, বর্তমান-সাবেক অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের বহন করে নিয়ে যায়। পেছনে বিভাগগুলোর বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শোভাযাত্রাটি সায়েন্স ল্যাব মোড় হয়ে নীলক্ষেত মোড় ঘুরে ফের কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। ভুভুজেলা, বাঁশি ও নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

জানা গেছে, ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও ওই ভবনের নকশা করেছিলেন কর্নেল গ্যাসটিন। খাঁটি ব্রিটিশ ঢঙে, বিলাতি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় বলে প্রচলিত আছে। এরপর ঢাকা কলেজের জন্য নির্মাণ করা হয় কার্জন হল। ভিক্টোরীয় স্থাপত্যরীতি, মোগল স্থাপত্যশৈলী আর বাংলার স্বতন্ত্র সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি ভবনটি ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভাইসরয় লর্ড কার্জন ঢাকায় এসে এর উদ্বোধন করেন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ওই বছরই ঢাকা কলেজ কার্জন হলে স্থানান্তর হয়। 

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার জন্য সব ছেড়ে দিয়ে ঢাকা কলেজ ঠাঁই নেয় পুরাতন হাইকোর্টের লাট ভবনে (বর্তমান সুপ্রিম কোর্টে)। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সশস্ত্র সেনারা হাইকোর্ট ভবন দখল করে তাঁবু হিসেবে ব্যবহার করেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজ বর্তমান কবি নজরুল কলেজের মূল ভবনে কিছুদিন অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চালায়। এর অল্পদিনেই ফুলবাড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে খান বাহাদুর আবদুল হাইয়ের পুরাতন ভবনে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ঢাকা কলেজ ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে স্থায়ী জায়গা বন্দোবস্ত পায় মিরপুর রোডে। সেই সময়ে ঢাকা কলেজের আয়তন ছিল ২৪ একর। তবে এরশাদ সরকারের সময় প্রায় ৬ একর জমি ছেড়ে দিতে হয়। বর্তমানে ঢাকা কলেজের মোট জমির পরিমাণ ১৮ দশমিক ৬ একর। 

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

হাজারো ছাত্র-শিক্ষকের মিলনমেলায় ১৮৩ বছরে পা ঢাকা কলেজের

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।