হেনস্তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদেরই দাঁড়াতে হবে - দৈনিকশিক্ষা

হেনস্তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদেরই দাঁড়াতে হবে

মাছুম বিল্লাহ |

শিক্ষকদের হেনস্তা করা, গায়ে হাত দেয়ার ঘটনা দেশের বিভিন্নস্থানে বিচিছন্নভাবে ঘটছে গত কয়েক বছর ধরে। এটি ঘটছিলো দুষ্ট রাজনীতির ছাত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন ও তাদের দোসরদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে। অতএব, এই কঠিন সামাজিক ব্যাধির ওষুধ আবিষ্কার করা কঠিন ছিলো। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর এসব ক্ষেত্রে স্বস্তি ফিরে আসার কথা, সবাই সেই আশায় বুকও বেঁধেছিলেন। কিন্তু না, কি যেনো এক দুষ্ট ব্যাধি সমাজকে গ্রাস করতে বসেছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলেছে শিক্ষক নির্যাতন আর জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর ঘটনা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও এর বিপক্ষে কথা বলেছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচেছ না। 

তাই যেসব শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষকদের সাথে এরূপ আচরণ করছেন তাদের পড়ালেখা ও ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে, এরা কি করবে ভবিষ্যতে? সমাজে অশান্তি ছড়াবে? অরাজকতা সৃষ্টি করবে?

তাই দাবি উঠেছে, প্রতিটি এলকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে শিক্ষক নির্যাতন বিরোধী কমিটি গঠনের। এতে শিক্ষকদের ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকরা যেহেতু সমাজের অভিভাবক তাই তাদের নিতে হবে অগ্রনী ভূমিকা। কারণ সমাজকে বখাটেদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না। 

সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের পাশে আছেন। আছেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, গণমাধ্যমও। 

আমরা জেনেছি, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি গত ৩১ আগস্ট এক জরুরি সভা আহবান করেছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও হেনস্তা বন্ধের দাবিতে উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ বহুমুখী মডেল উচচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সেখানে উপজেলার মাধ্যমিক স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার আস্থা পেলে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখবেন।  

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, কিছু অসাধু চক্র স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ফুসলিয়ে ও ব্যবহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের ওপর অন্যায়, অবৈধভাবে নির্যাতন, অপমান, হেনস্তা ও জোরপূর্বক পদত্যাগের চেষ্টা করছে। এসব নিয়ে গত গত ২৭ আগস্ট আমরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান করেও কোন প্রতীকার পাই নি। তাই বাধ্য হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। 

বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা এক ধরনের প্রতিবাদ! কিন্তু প্রকৃত সমাধান কী? দেশে আইন প্রয়োগ করে পুলিশ বাহিনী। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর কি অবস্থা আমরা তা সবাই অবগত আছি। দেশের প্রশাসনের কি অবস্থা তাও সবাই জানি। সবারই কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তাই শিক্ষকদেরকেই পদক্ষেপ নিতে হবে, সমাজের অভিভাবকের মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকদের নিজেদের শিক্ষার্থীরাই যদি তাদের উপর আক্রমণ করে, তাহলে তারা সমাজকে কি দেবে? সেই ভাবনা থেকে দেশের সকল শিক্ষকদের এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে এখনই দাঁড়াতে হবে। সাহস করে দাঁড়ালে সমাজের সর্বস্তরের লোক তাদের সমর্থ করবে। 

লেখক : ক্যাডেট কলেজের সাবেক অধ্যাপক 

কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের - dainik shiksha কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর উপবৃত্তি কর্মসূচির প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন ৫০০ শিক্ষক - dainik shiksha উপবৃত্তি কর্মসূচির প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন ৫০০ শিক্ষক রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের নতুন প্রস্তাব - dainik shiksha রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের নতুন প্রস্তাব শিক্ষকদের মনোকষ্ট - dainik shiksha শিক্ষকদের মনোকষ্ট সেপ্টেম্বরে লিখিত পরীক্ষার ফল, ভাইভা অক্টোবর - dainik shiksha সেপ্টেম্বরে লিখিত পরীক্ষার ফল, ভাইভা অক্টোবর শিক্ষক হেনস্তা ও অপমানের নেপথ্যে - dainik shiksha শিক্ষক হেনস্তা ও অপমানের নেপথ্যে ছাত্রলীগ নেত্রীরাও স্কুল-মাদ্রাসা অডিটের দায়িত্বে - dainik shiksha ছাত্রলীগ নেত্রীরাও স্কুল-মাদ্রাসা অডিটের দায়িত্বে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058331489562988