হেফাজতকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, ঢাবি ছাত্রলীগের নেতাকে পুলিশের সামনে হেনস্তা - দৈনিকশিক্ষা

হেফাজতকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, ঢাবি ছাত্রলীগের নেতাকে পুলিশের সামনে হেনস্তা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি |

হেফাজত ইসলামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে পুলিশের উপস্থিতিতে জনতা হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের জয়শ্রী বাজারে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ–আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। 

 

ছাত্রলীগ নেতা, প্রত্যক্ষদর্শী ও ধরমপাশা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা আফজাল গত ২৯ মার্চ দুপুরে ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ছবি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। ঘণ্টা তিনেক পর তিনি স্ট্যাটাসটি শুধু নিজে দেখতে পাওয়ার মতো (অনলি মি) ব্যবস্থা করেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু যুবক এর স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে ওই ছাত্রলীগ নেতা নিজের গ্রাম মহেশপুর থেকে জয়শ্রী বাজারে যান। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমের ছেলে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের কারিগর আল মুজাহিদ (২৫) বিভিন্ন বয়সী ৩০ থেকে ৪০ জনকে নিয়ে কেন ওই পোস্ট দিয়েছেন, তার ব্যাখ্যা জানতে চান। আফজাল তখন উপস্থিত লোকজনকে বলেন, তিনি হেফাজতে ইসলামকে ব্যঙ্গ করে কোনো পোস্ট দেননি। তবে হেফাজতের আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদে পোস্ট দিয়েছেন। 

এ নিয়ে আফজাল ও মুজাহিদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। সেখানে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মুজাহিদ ওই ছাত্রলীগ নেতার শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। আফজালের কয়েকজন বন্ধু ও স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুজাহিদের পক্ষের লোকজন বেশি হওয়ায় তাঁরা আফজালকে জয়শ্রী বাজারে থাকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আটক করে রাখেন। দলীয় কার্যালয়ের আশপাশে তখন তিন শতাধিক মানুষ অবস্থান নেয়।

খবর পেয়ে ধরমপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আফজালের বিপক্ষে জড়ো হওয়া মানুষকে শান্ত করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সেখানে উপস্থিত হন ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানের ভাষ্য, ওসির নির্দেশে তাঁকে হাতকড়া পরানো হয়। উপস্থিত লোকজনের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে ধরমপাশা থানার পুলিশ। এরপর তাঁকে ধরমপাশা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর বিস্তারিত পরিচয় পেয়ে মাঝপথেই পুলিশ হাতকড়া খুলে দেয়। থানায় তিনি রাত সাড়ে আটটার দিকে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। পুরো ঘটনার বিবরণ সাদা কাগজে লিখে তাতে সই করে তিনি থানা থেকে ছাড়া পান। এই নেতা বলেন, ‘ধরমপাশা থানার পুলিশ আমাকে অন্যায়ভাবে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছে। এ ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আল মুজাহিদ দাবি করেন, ‘হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস দেওয়ার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি। ছাত্রলীগ নেতা তখন ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। হেফাজতকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় ও ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করায় থানা-পুলিশকে ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় লোকজন তাঁকে দলীয় কার্যালয়ে আটকে রাখেন। এর চেয়ে বেশি কিছু হয়নি।’

এ ঘটনায় রাতেই ধরমপাশা থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এসএসআই আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ও এএসআই আনোয়ার ওই নেতার হাতে হাতকড়া লাগাইনি। ওসি স্যারের নির্দেশে সিভিল পোশাকে থাকা একজন এএসআই এই হাতকড়া পরান।’

ধরমপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বুধবার সকালে বলেন, ‘এ ঘটনার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমাদের থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেনকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমি পরিস্থিতি শান্ত করার মাধ্যমে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছি। স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতিতে ওই নেতা থানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন।’ তবে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে হাতকড়া পরানো হয়নি বলে ওসি দাবি করেন।

সূত্র: প্রথম আলো। 

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0087549686431885