আগামী ২১০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা ৮৮০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। তবে এই সংখ্যা জাতিসংঘের আগের দেওয়া তথ্যের চেয়ে ২০০ কোটি কম। বুধবার আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন। দ্য গার্ডিয়ান
নতুন এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মহার হ্রাস ও প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি বিশ্বে ক্ষমতার মেরুকরণ আরো বাড়াবে। প্রতিবেদনে এ শতাব্দীর শেষে জনসংখ্যার ওই হ্রাসের কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ২০৬৪ সাল নাগাদ জনসংখ্যা ৯৭০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এরপর জনসংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। শতাব্দী শেষে এই সংখ্যা গিয়ে ৮৮০ কোটিতে আসবে। কী তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তারা এসব কথা বললেন তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, নারীরা আরো বেশি সচেতন হয়ে উঠবে। তাদের মাঝে শিক্ষার হার বেড়ে যাবে। আর এতে করে তারা জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আরো বেশি সতর্ক হয়ে উঠবেন। ফলে ধীরে ধীরে জনসংখ্যা কমে আসবে। ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) গবেষকরা এ কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, জাপান, থাইল্যান্ড, ইতালি ও স্পেনের মতো অন্তত প্রায় ২৩টি দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যাবে। যদিও সাব-সাহারা অঞ্চলে জনসংখ্যা তিন গুণ হয়ে যাবে এবং বর্তমান শতাব্দীশেষে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই হবে আফ্রিকা মহাদেশের।
গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক ও আইএইচএমই-এর পরিচালক ক্রিস্টোফার মুররে বলেছেন, জনসংখ্যা হ্রাসের এই পূর্বাভাস পরিবেশের জন্য সুখবর, খাদ্য উত্পাদনের ওপর চাপ কমাবে এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পাবে। পাশাপাশি আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের কোনো কোনো দেশের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, তবে আফ্রিকার বাইরে অধিকাংশ দেশে শ্রম জনশক্তি হ্রাস পাবে এবং জনসংখ্যা পিরামিড ঘুরে যাবে, যার ফলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
গবেষকরা বলছেন, জন্মহার কমে গেলেও জনসংখ্যা সংকোচনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য নিয়ে আসবে অভিবাসন। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো দেশ। এ নিয়ে মুররে আরো বলেন, ১৯৬০ সাল থেকেই বিশ্বে তথাকথিত জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে। কিন্তু সহসাই আমরা একটি সন্ধিক্ষণের দেখা পাব, যখন বিশাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা খুব বেশি থেকে খুব কম হওয়া শুরু করবে।’