দেশের ৭ হাজার ১৮টি প্রাইমারি স্কুল প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে বলে গত মঙ্গলবার সহযোগী দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় এসব স্কুলে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে। প্রশাসনিক জটিলতায় শিক্ষকদের মধ্যে বাড়ছে দ্বন্দ্ব। একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, দাফতরিক কাজে তাদের মাসে অন্তত ১০ কর্মদিবস উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যেতে হয়।শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, দেশে বর্তমানে প্রাথমিকের ২১ হাজার ৮১৪টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। এছাড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও হালনাগাদ করা, ভোট গ্রহণ, শিশু জরিপ, কৃষিশুমারি, আদমশুমারি, উপবৃত্তির তালিকা প্রণয়ন ও প্রাপ্তিতে সহযোগিতাসহ ১৩ ধরনের কাজ করতে হয় শিক্ষকদের। এর মধ্যেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৭ হাজার।
শিক্ষা কোনভাবেই জোড়াতালি দেয়ার খাত নয়। এটা এমন এক ক্ষেত্র, যেখানে কোন ঘাটতি দেখা দিলে ভবিষ্যতে তার প্রভাব পড়বে অন্যান্য খাতেও। সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেছে অথচ ৭ হাজার ১৮টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক নেই। একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র যদি এরকম হয় তাহলে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কিভাবে? দেশের সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার কার্যক্রমের কাঠামো যে ডিজিটাল বাংলাদেশর সঙ্গ সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এটা এখন স্পষ্ট।
একটি বিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও মনিটরিং সব বিভাগের দেখভাল করার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। সহকারী শিক্ষকদের নেতৃত্বদান, ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধনসহ সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রধান শিক্ষকের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। তবে শিক্ষা বিস্তারে সাফল্যের নানা গালভরা কথা বলা হলেও প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পাঠদান যেটাও হচ্ছে সেটাও হচ্ছে দায়সারা গোছের অথবা অসম্পূর্ণ।
দেশের ৭ হাজার ১৮টি প্রাইমারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোন জটিলতা থাকলে সেটা দূর করতে হবে দ্রুত। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত এ কাজটি করতে হবে শিক্ষার ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে। ৭ হাজার ১৮টি প্রাইমারি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রেখে কখনোই মানসম্মত শিক্ষা আশা করা যায় না।