‘আজকাল ছাত্ররা শিক্ষককে দেখলে মন থেকে সালাম দেয় না’ - দৈনিকশিক্ষা

‘আজকাল ছাত্ররা শিক্ষককে দেখলে মন থেকে সালাম দেয় না’

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, আজকাল ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কটা খুবই যান্ত্রিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। শিক্ষককে দেখলে ছাত্র সালাম দেয় বটে; মন থেকে করে না, যান্ত্রিকভাবে করে। এই যে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে একজনের চরিত্রের বিকাশ ঘটে, শিক্ষকের এই প্রভাব তার মধ্যে কাজ করে না। এটি খুব মূল্যবান ব্যাপার। আমরা এটি থেকে অনেকখানি সরে এসেছি। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এইচ খান মিলনায়তনে ‘খানবাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক-২০১৮’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এ স্বর্ণপদক লাভ করেন। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ওই স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আমরা যখন শিক্ষকতায় প্রবেশ করেছিলাম তখন উচ্চ শিক্ষা অঙ্গনের পরিবেশ আজকের চেয়ে অনেক ভিন্ন ছিল। ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে একটা গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন করা তখন সম্ভবপর হতো। ছাত্র ও শিক্ষকদের অনুপাত খুব অনুকূল ছিল। ক্লাসে ও বাইরে শিক্ষকেরা ছাত্রদের জন্য সময় দিতে প্রস্তুত থাকতেন, তাদের ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারের বই পড়তে দিতেন এবং ছাত্রদের ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধার দিকে নজর রাখতেন। অনেক ছাত্ররা আমাদের সময় পরীক্ষার ফি দিতে পারছে না, কোনো না কোনো শিক্ষক তা করে দিয়েছেন। এ রকম একটি পরিবেশের মধ্যে আমরা কাজ করেছি।

তিনি বলেন, কিন্তু আজকে মনে হয় যে, এই ব্যক্তিগত যোগাযোগের কিছু আর তেমন অবশিষ্ট নেই। ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কটা খুবই যান্ত্রিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। আমি আশা করি, সাম্প্রতিককালে উচ্চশিক্ষার অঙ্গন নিয়ে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা হয়েছি, তার সমাধান করতে সামনের দিকে এগিয়ে যাব এবং যথার্থ শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে পারব।

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান সম্পর্কে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, তিনি শুধু একজন স্বনামধন্য অধ্যাপকই নন, তার জ্ঞানগর্ভ ও অভিজ্ঞতালব্ধ গবেষণা, মৌলিক প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা এবং সম্পাদিত বহু গ্রন্থ তাঁকে পাঠকসমাজে করেছে নন্দিত। তাঁর সাহিত্যকর্ম সর্বজনবিদিত; তাঁর পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা দেশ ও দেশের বাইরে পরিব্যাপ্ত। আমি এই জীবন্ত কিংবদন্তিকে ব্যক্তিগতভাবে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে বলা যায় জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান একটি প্রতিষ্ঠান।

এর আগে প্রধান বিচারপতি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে স্বর্ণপদক পরিয়ে দেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের হাতে ক্রেস্ট, সনদ, দুই লাখ টাকার চেক ও বই তুলে দেওয়া হয়। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ড. এস এম খলিলুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ ও রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বক্তব্য দেন।

আয়োজকেরা জানান, সমকালীন কৃতি ব্যক্তিদের প্রতিভা ও অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিবছর জাতীয় পর্যায়ের একজন কৃতী ব্যক্তিত্বকে খান বাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক দিয়ে আসছে। শনিবার পর্যন্ত ২৭ জনকে ওই পদক দেয়া হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044269561767578