বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য এককালীন অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ভাতার তহবিল বন্ধ করে নিয়মিত পেনশন ব্যবস্থা চালু করা উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধ্যক্ষ সমিতির সভাপতি ও দৈনিক শিক্ষার উপদেষ্টা সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান।
তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য যখন এমপিও বাবদ সামান্য কিছু টাকা ছাড়া আর কোনো সুবিধাই ছিল না তখন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে অবসর সুবিধা বোর্ডও হয়। চাঁদা দিয়ে সুবিধা নেয়ার সিদ্ধান্তও হয়। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জাতীয় পে-স্কেলভুক্ত হয়েছেন। সুতরাং শিক্ষক ছাড়া পে-স্কেলভুক্ত অন্যান্য বিভাগে কর্মরর্তারা এককালীন অবসর সুবিধা পাওয়ার জন্য চাঁদা দেন বলে জানা নেই। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকরা একই বই পড়ান। শতকরা ৯৭ ভাগ প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। পাবলিক পরীক্ষায় সেরাদের সেরারা সবাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে।
প্রথম যুক্তি হিসেবে মাজহারুল হান্নান বলেন, সরকারি স্কুল-কলেজ শিক্ষকরা অবসর সুবিধার জন্য এক টাকাও চাঁদা দেন না। তাহলে বেসরকারি শিক্ষকরা কেন দেবেন?
বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য পেনশন চালুর দাবি জানিয়ে মাজহারুল হান্নান বলেন, ‘পেনশন হলো একজন শিক্ষকের সারাজীবনের কাজের স্বীকৃতি। সেই পেনশন না দিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের শুধু এককালীন অবসর সুবিধা দেয়া হয়, তাও চাঁদার বিনিময়ে। যা এখনকার পরিস্থিতিতে নিতান্তই বেমানান।’ পেনশন ব্যবস্থা চালু করে অবসর সুবিধা বিলুপ্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, কল্যাণ ট্রাস্টে টাকা রাখা তো ফোর্স সেভিংয়ের মতো। এটা রাখার কোনো যুক্তি এখন আর নেই। এছাড়া মাসিক এমপিওর ৬ শতাংশ টাকা কাটার ফলে অবসরের পর কম-বেশি যে টাকা পান ১০ শতাংশ টাকা কাটার পর অবসর-কল্যাণ সুবিধার টাকা বাড়ছে না।
আরও বলা হচ্ছে, সরকার অবসর ও কল্যাণ তহবিলে টাকা দিচ্ছে। তাই শিক্ষকদেরও বাড়তি চাঁদা দিয়ে এগিয়ে আসা দরকার। কথা হচ্ছে, সরকার যে টাকা দিচ্ছে এসব টাকাও তো শিক্ষকসহ এদেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা, নয় কি?
সরকারের দেয়া শত শত কোটি টাকা কেন সরকারি ব্যাংক থেকে তুলে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হয়? সুদের টাকা কে খায়? অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিধান ভঙ্গ করে কারা, কেন শিক্ষকদের জমানো টাকা এবং সরকারের দেয়া শত শত কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হয়?