‘স্কুলের দুর্নাম হবে’ তাই হিমুকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হলো না! - দৈনিকশিক্ষা

‘স্কুলের দুর্নাম হবে’ তাই হিমুকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হলো না!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ফলাফল ভালো করতে না পারলে স্কুলের দুর্নাম হবে তাই হিমু খাতুন নামে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিতে দেননি পাবনার চাটমোহর উপজেলার দক্ষিণ শিবরামপুর সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম। রোববার থেকে শুরু হওয়া পিইসি পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুপস্থিত ছিল হিমু। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, হিমু উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আবদুল হাই-সেলিনা পারভীন দম্পতির মেয়ে। সে দক্ষিণ শিবরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।

রোববার থেকে শুরু হওয়া পিইসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির বিষয়ে অনুসন্ধানে নামলে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। এ ব্যাপারে এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকও অকপটে স্বীকারও করেন হিমুকে কেন পরীক্ষা দেয়ানো হয়নি।

সোমবার বিকালে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, রামচন্দ্রপুর গ্রামের আবদুল হাই ও সেলিনা পারভীন দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে হিমু বড়। জন্ম থেকেই হিমু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার চলাফেরা আর ১০ জন ছেয়ে-মেয়ের মতো স্বাভাবিক নয়।

তবে একটু সময় দিলে সবকিছুই বুঝতে পারে সে। গত অক্টোবর মাসে স্কুলের চূড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষায়ও পাস করে হিমু। কিন্তু রোববার থেকে শুরু হওয়া পিইসি পরীক্ষায় তার কেন্দ্র গুনাইগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিমুর আসনটি ছিল ফাঁকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরুর দুই দিন আগে হিমুদের বাড়িতে যান দক্ষিণ শিবরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম। এ সময় তিনি ফলাফল ভালো করতে না পারলে স্কুলের দুর্নাম হবে, তাই হিমুকে এ বছর পরীক্ষা না দেয়ানোর জন্য হিমুর বাবা-মাকে বলেন।

প্রধান শিক্ষকের এমন কথায় হিমুর বাবা-মা রাজি হন। এরপর প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম কৌশলে হিমুকে এ বছর পরীক্ষা দেবে না মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্রও নেন।

আবদুল হাই বলেন, ‘ওই স্কুলে ভালো পড়াশোনা হয় না। ছাত্র-ছাত্রী কম। তবুও মেয়েকে দিয়েছিলাম স্কুলটি বাড়ির পাশে বলে। আমার মেয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হলেও পড়তে ও লিখতে পারে। তবে অন্যদের চেয়ে একটু দেরি হয়। পরীক্ষার দুইদিন আগে প্রধান শিক্ষক বাড়িতে এসে ভালো ফলাফল করতে না পারলে স্কুলের দুর্নাম হবে এবং আগামীতে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেয়ানোর জন্য একটি প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে গেছে। সে জন্য হিমুর এ বছর পরীক্ষা দেয়া হলো না।’

এ ব্যাপারে মোবাইলের মাধ্যমে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, ‘হিমু নামের ওই শিক্ষার্থী লিখতে পারে না, বোঝে না কিছুই। তো দেখলাম, পরীক্ষা দিলে ফেল করবে, এতে স্কুলে বদনাম হবে। তাই আগামী বছর পরীক্ষা দেয়ার জন্য হিমুর বাবা-মায়ের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়েছি।’

পরে তিনি এই প্রতিবেদকের নাম্বারে ফোন দিয়ে নিউজ না প্রকাশ করার জন্য অনুরোধও করেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এত বছর যে মেয়েটি পাস করে এল সেই মেয়ে পাস করতে পারবে না এটা ভুল। আর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। ওই প্রধান শিক্ষক প্রত্যয়ন নিয়ে এবং স্কুলের দুর্নাম হবে বলে পরীক্ষা দিতে না দিয়ে অপরাধ করেছেন। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0072240829467773