‘হোমিও কলেজের বিরুদ্ধে নয়, ঋত্বিক ঘটকের ভিটা রক্ষায় আন্দোলন’ - দৈনিকশিক্ষা

‘হোমিও কলেজের বিরুদ্ধে নয়, ঋত্বিক ঘটকের ভিটা রক্ষায় আন্দোলন’

রাজশাহী প্রতিনিধি |

কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর পৈত্রিক ভিটা সংরক্ষণের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন হোমিওপ্যাথিক কলেজের বিরুদ্ধে নয় বলে জানিয়েছেন আন্দোলন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ঋত্বিক ঘটকের ভিটায় নয় বরং অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হোক হোমিওপ্যাথিক কলেজ। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে এসব কথা জানানো হয়।

গত ২ জানুয়ারি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আয়োজিত মানববন্ধনে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ অন্য বক্তারা ভিটা সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন অভিযোগ করে প্রতিবাদলিপিতে এসব মানহানিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সেখানে আরও বলা হয়, ‘ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক ভিটা উদ্ধারের জন্য রাজশাহীর চলচ্চিত্র সংসদসমূহ ও সকল পর্যায়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং ঢাকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, তানভীর মোকাম্মেল, মোরশেদুল ইসলামসহ ১২ খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার, ভারত, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র প্রেমীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন কর্মসূচিকে মানববন্ধনে যেভাবে হোমিওপ্যাথিক কলেজকে ধ্বংসের পাঁয়তারা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে তা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির মতো একটি সক্রিয় ও দেশে-বিদেশে পরিচিত চলচ্চিত্র সংসদকে একটি নামসর্বস্ব সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেই তারা ক্ষান্ত হননি, তারা এর সভাপতি এবং গত এক যুগ ধরে ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক ভিটায় দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের এনে ‘ঋত্বিক সম্মাননা পদক প্রদান ও চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষককে ভূমিদস্যু ও ‘দখলবাজ হিসেবে আখ্যা দিতেও পিছপা হননি।’

আন্দোলনকারীরা জানান, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের আগে ঋত্বিক ঘটকের বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক রাজশাহীর মিঞাপাড়ায় বাড়ি করে স্থায়ী আবাস গড়েন। দেশভাগের পরে এই বাড়ি ছেড়ে ঋত্বিক ঘটকের পরিবারকে কলকাতা চলে যেতে হয়। এই ভিটার ৩৪ শতাংশ জমি এরশাদ সরকারের শাসনামলের শেষ দিকে হোমিওপ্যাথিক কলেজকে লিজ দেয়া হয়। ১৯৮৭-৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ওই লিজ-সংক্রান্ত যে দলিলপত্রের হদিস পাওয়া যায় তাতে ঋত্বিকের বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক ও মা ইন্দুবালা দেবীর নাম উল্লেখ পাওয়া যায় এবং জমিটিকে ‘এনিমি প্রপার্টি’ তথা ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে উল্লেখ পাওয়া যায়।

এই জমিরই ফাঁকা একটি অংশে হোমিওপ্যাথিক কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দোতলা ভবন নির্মাণ করে। অপর অংশে ঋত্বিক ঘটক ও তার পরিবার, তার বড় ভাই মনীশ ঘটকের মেয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর স্মৃতিবিজড়িত কয়েকটি কক্ষ এখনও অবিকৃত রয়েছে। এখানে বিগত সময়ে মহাশ্বেতা দেবী, ঋত্বিক ঘটকের জমজ বোন প্রতীতি দেবী ও তার মেয়ে বর্তমান সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি আরমা দত্ত একাধিকার এই ভিটায় এসে স্মৃতিবিজড়িত এসব কক্ষ দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন।

বর্তমানে টিকে থাকা কক্ষগুলো হোমিওপ্যাথিক কলেজের কমনরুম ও হাসপাতালের বহির্বিভাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ গত ২১ ডিসেম্বর এই অংশের একটি দেয়াল ও সংলগ্ন একটি কক্ষ সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণের জন্য ভেঙ্গে ফেলে। এরপরই দেশে-বিদেশে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে হোমিওপ্যাথিক কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

প্রতিবাদ লিপিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেন, আমরা রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই আন্দোলন কিছুতেই হোমিওপ্যাথিক কলেজের বিরুদ্ধে নয়।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034480094909668