রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী গোদাগাড়ীর রাজাবাড়িহাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পিটিয়েছিলেন, এমন প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩২তম সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হয়েছে। এমপি ফারুকের এমন কাণ্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় সংসদকে অবহিত করার ব্যাপারে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে এমপি ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না থাকায় সিন্ডিকেট কিছুই করতে পারেনি। তদন্ত কমিটিও কোনো শাস্তির সুপারিশ করেনি। তবে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ফারুক চৌধুরী তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে নিয়েই সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, অধ্যক্ষকে মারেননি তিনি। আর অধ্যক্ষ বলেছিলেন, তাঁরা কয়েকজন নিজেরা মারামারি করেছিলেন। সংসদ সদস্য তাঁকে মারেননি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি প্রমাণ পেয়েছে, এমপি ফারুক অধ্যক্ষকে পিটিয়েছিলেন।
গত ৭ জুলাই রাতে রাজশাহী নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে মারধরের ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা তদন্তে ১৪ জুলাই তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর প্রধান ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। কমিটির সদস্যরা টানা কয়েক দিন রাজশাহীতে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন। এর কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুত হলেও সিন্ডিকেটে তোলার আগে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে।
তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলতে কমিটির প্রধান মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় কথা বলেছেন নিউইয়র্কে অবস্থানরত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি বলেছেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা উঠে এসেছে। যেহেতু ঘটনার সঙ্গে একজন সংসদ সদস্য জড়িত, তাই বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদকে অবহিত করার ব্যাপারে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারিনি; এ জন্য যে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাই এমপির হাতে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁকে নিয়ে আমরা এগোতে পারব না। ঘটনার সঙ্গে গোদাগাড়ীর আরেকজন শিক্ষক সম্পৃক্ত। তাঁকেও আমরা পর্যবেক্ষণে রাখব। এ ছাড়া আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে ইতিমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে।’