পিরোজপুরের নাজিরপুরের উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জুর বিরুদ্ধে সিরাজুল হক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় তিন লাখ টাকা মূল্যের ৬টি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ৫-৬ দিন ধরে লোকজন দিয়ে গাছগুলো কেটে নেন তিনি। গাছগুলো অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে জানতে পেরে গত ১৬ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার অমূল্য রতন রঞ্জন হালদার।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু দাবি করেন, স্কুলের সহাকরী শিক্ষক হাসান সর্দারের কাছ থেকে গাছগুলো ক্রয় করেছেন তিনি।
সিরাজুল হক সরকারি উচ্চ বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ওই গাছগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় থাকায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসান সরদার আমাকে জানিয়েছেন গাছগুলো অপসারণের জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তাকে লিখিত চিঠি দিয়েছেন। তবে কে বা কারা গাছগুলো কেটেছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। গাছগুলো বিক্রির ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’
সহকারী শিক্ষক হাসান সরদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘প্রধান শিক্ষকের অনুমতিক্রমে আমি গাছগুলো অপসারণ করার অনুমতি চেয়ে ইউএনও স্যারকে একটি চিঠি দিয়েছি। এর পরে কি হয়ে তা আমার জানা নেই ‘
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘সিরাজুল হক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই গাছগুলো অপসারণের জন্য অনুমতি চেয়ে আমাকে কোনো চিঠি দেয়নি। গাছ কেটে নেয়ার সংবাদ পেয়ে বনবিভাগের মাধ্যমে শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের কালিবাড়ী ফুয়াদ হোসেনের স-মিলে একটি গাছ পেয়ে তা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভুমি) ফাহমি মো. সায়েফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা বন বিভাগের ফরেস্টার ইউসুফ আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘ওই গাছের মূল্য নির্ধারণের একটি চিঠি পেয়ে মূল্য নির্ধারণ করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসান সরদারকে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তার ইউএনও স্যারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘ওই মূল্যবান গাছগুলো অবৈধভাবে কেটে নেয়া হয়েছে জেনে ইউএনওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তার প্রতিবেদন পাওয়ার পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’