কুলিয়ারচরে আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের শিক্ষক নিয়োগ ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর তালিকা নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী তালিকায় অনিয়মের অভিযোগে গত দেড় বছরেও অনুমোদন পায়নি প্রকল্পটি। সর্বশেষ স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বদলির পর অনুমোদন আদায় করারও অভিযোগও উঠেছে।
সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের জন্য আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কুলিয়ারচরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়া পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) সহযোগী সংস্থা হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বন্ধন সোসাইটি। গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে শিক্ষকদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। সেখানে ৭০টি পদের বিপরীতে ২৬৩ জন আবেদন করলেও পরীক্ষা দেন মাত্র ১০৩ জন। পরীক্ষার নোটিস সবাই পাননি এমন অভিযোগও উঠেছে। যাদের সঙ্গে প্রকল্পের ম্যানেজারের সমন্বয় হয়েছে তাদেরই চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে এবং ফোন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভুয়া কাগজপত্র দিয়েও অনেকে নিয়োগ পেয়েছেন- এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীর তালিকা পুরোপুরি ভুয়া- এ অভিযোগে যে প্রকল্প দেড় বছরেও অনুমোদন দেননি, সে প্রকল্প বদলি আদেশ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে কীভাবে অনুমোদন পেল জানতে চাইলে সদ্য বদলি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কবিরুল ইসলাম বলেন, কীভাবে একটি ভুয়া তালিকা অনুমোদন পেল এটা আমি বলতে পারব না। এটি ইউএনও বলতে পারবেন। তবে এখানে যে শিক্ষার্থীদের তালিকা রয়েছে, সেটা আমার কাছে এখনো আছে। এই তালিকায় কেবল ১৬৩ জন শিক্ষার্থী সঠিক রয়েছে। বাকি প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ভুয়া। অনেকের নাম, বাবার নাম আছে কিন্তু বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই এমন ছাত্রের তালিকায় রয়েছে। এছাড়া এক এলাকার ছাত্র অন্য এলাকায় দেখিয়ে কেবল সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব কারণে আমি অনুমোদন দেইনি। আমি এগুলো মার্ক করে সংশোধন এবং প্রকৃত ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের তালিকা করতে বলেছি, যেটি তারা দেড় বছরেও করতে পারেনি। আমি বিষয়টি নিয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছি।
প্রকল্পের ম্যানেজার রুমা বেগম বলেন, শিক্ষার্থী তালিকায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র নেই। তবে কিন্ডার গার্টেন বা মাদ্রাসার কোনো ছাত্রের অভিভাবক স্বেচ্ছায় আমাদের এখানে ভর্তির জন্য এলে আমরা কেবল তাদের নিয়েছি।
এর বাইরে কোনো অনিয়ম নেই। বরং আমাদের ঝরে পড়া তালিকা যখন উপজেলা শিক্ষা অফিসে দাখিল করি, তখন সেই তালিকার ছাত্রদের প্রাথমিকে ভর্তি করেছি, যাতে আমরা প্রকল্পটি চালু করতে না পারি।
এই বিষয়ে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, যদি শিক্ষার্থী তালিকায় কোনো ডুপ্লিকেট শিক্ষার্থীর নাম থাকে তবে সে শিক্ষার্থীর টাকা পাবে না। কেবল যে শিক্ষার্থী সঠিক হবে তাদের নামেই উপবৃত্তির টাকা যাবে।