কবজি কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা, হাতের দিকে তাকিয়ে কাঁদছেন সেই শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

কবজি কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা, হাতের দিকে তাকিয়ে কাঁদছেন সেই শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

যে হাতে লিখে শিক্ষার্থীদের পড়াতেন, সেই ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে। ছয় ঘণ্টার বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ায় হাতের বিচ্ছিন্ন অংশ আর জোড়া লাগানো যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই কথা শোনার পর থেকে কবজিহীন হাতে লাগানো ব্যান্ডেজের দিকে তাকিয়ে শুধুই কাঁদছেন কলেজশিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন (৫২)। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহম্মেদ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ থেকে বের হয়ে বংশীতলা এলাকা দিয়ে শহরে যাচ্ছিলেন তোফাজ্জেল হোসেন। এ সময় তাঁকে কয়েকজন সন্ত্রাসী ঘিরে ধরে পেটাতে থাকেন। তিনি সেখান থেকে দৌড়ে কয়েক শ গজ দূরে নির্মাণাধীন একটি সেতুর ওপর যান। সেখানে অবস্থান নেওয়া আরও ১০-১২ জন সন্ত্রাসী রামদা দিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকে। এ সময় তাঁর ডান হাতের কবজি থেকে ওপরের এক ইঞ্চিসহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি পড়ে গেলে তাঁর পিঠেও এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন তোফাজ্জেলকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

ওই দিন সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি কোপে তাঁর বাঁ পাজর, মেরুদণ্ডের হাড়সহ শরীরের ১৩টি স্থানে গুরুতর জখম হয়। কুষ্টিয়া জেলারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার শেষে ওই দিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) নিয়ে আসা হয় তাঁকে।

ঢামেক হাসপাতালের পুরোনো ভবনের নিচতলার ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে তোফাজ্জেল হোসেনের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের ১১ নম্বর বিছানায় গিয়ে দেখা গেছে, শুয়ে আছেন তোফাজ্জেল হোসেন। জ্ঞান ফিরলেও তোফাজ্জেল হোসেন কথা বলতে পারেন না। ডাকলে চোখ খুলে সাড়া দেন। চোখ খুলে চেয়ে থাকেন ডান হাতের দিকে, আর শুধু কাঁদেন।

ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে প্রায় ১২ বছর ধরে ওই কলেজে শিক্ষকতা করেন তোফাজ্জেল হোসেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তাঁর ব্যবসাও রয়েছে। তাঁর দুই ছেলে সেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন।

তোফাজ্জেল হোসেনের ছোট ছেলে হাসিব হোসেন বলেন, ‘বাবা কথা বলতে পারেন না। জ্ঞান ফেরার পর কয়েকজন হামলাকারীর নাম বলেছিলাম, বাবা মাথা নেড়ে সায় দিয়েছেন। হামলাকারীরা স্থানীয়ভাবে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমার বাবা তাঁদের এসব অপকর্মের বিরোধিতা করতেন। সে কারণে তারা হামলা করেছে।’

হাসিব জানান, স্থানীয় সামাদ, লিটন, নাজিম, আরিফ, জাফর, মকুলসহ বেশ কয়েকজন তাঁর বাবার ওপর হামলা করেছেন। বাবা আরেকটু সুস্থ হওয়ার পর মামলা করা হবে।

তোফাজ্জেল হোসেনের ভাগনে সুজনুর রহমান বলেন, মামা গত তিন বছর স্থানীয় শ্মশান বাজার হাটের ইজারাদার ছিলেন। কিন্তু এ বছর অন্য লোক ওই হাটের ইজারা পেয়েছেন। মামা যেন আর কোনো দিন ওই হাটের ইজারার জন্য চেষ্টা না করেন, সে জন্যই তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। স্থানীয় লিটন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা মামার ওপর হামলা করেছে।

আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি - dainik shiksha আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে - dainik shiksha সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড - dainik shiksha মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি - dainik shiksha ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038290023803711