একটি এফিলিয়েটিং ইউনিভার্সিটি হিসাবে ১৯৯২ সালের ৩৭নং আইনানুসারে যাত্রা শুরু করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
মূলত ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষা কার্যক্রমকে অধিভুক্ত কলেজগুলো তদারকি সংক্রান্ত বাড়তি চাপ থেকে মুক্ত করতে এবং সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিভুক্ত কলেজগুলোয় অধ্যয়ন করেন ২৯ লাখ ৭৫ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত উপসম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
উপসম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও যাত্রার কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়টি জড়িয়ে পড়ে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অদূরদর্শিতার পরিচয় মিলে বিশেষ করে ভর্তি প্রক্রিয়া এবং পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে। প্রথমদিকে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির বিধান থাকলেও হঠাৎ করেই এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বাছাই শুরু হয়।
ফলে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাবহারিক পরীক্ষায় তুলনামূলক অধিক নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এগিয়ে থাকে অধিভুক্ত কলেজগুলোয় ভর্তির ক্ষেত্রে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এইচএসসি পর্যন্ত বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের সিলেবাস তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত। ফলে এসব শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেলেও মৌলিক ভিত দুর্বল থাকায় তাদের অনেকের পক্ষেই বেশিদূর এগোনো সম্ভব হয় না।
এতে বৃদ্ধি পায় ঝরে পড়ার হার। অপচয় বাড়ে রাষ্ট্রীয় অর্থের আর মহামূল্যবান সম্পদ তারুণ্যের। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণকল্পে কোনো গবেষণামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বরং জনবল ও অবকাঠামোগত আবশ্যকীয়তা উপেক্ষা করে যত্রতত্র এবং বাজার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুর মতো অপরিণামদর্শী কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
তাছাড়া কয়েক বছর ধরে চলে আসা তীব্র সেশনজট কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রাশ প্রোগ্রাম নামে কিছু অভিনব কৌশল গ্রহণ করে। কখনো কখনো সংশ্লিষ্ট সেশনের মেয়াদ পূর্তির আগেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। এছাড়া দ্রুত ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্যে সুদীর্ঘ সময় প্রচলিত প্রতিটি উত্তরপত্র কমপক্ষে দুজন পরীক্ষকের মূল্যায়নের বিধান প্রত্যাহার করে, একজন মূল পরীক্ষক এবং বেশ কয়েকজন পরীক্ষকের মূল্যায়নকৃত উত্তরপত্রের যথার্থতা যাচাইয়ে একজন প্রধান পরীক্ষক নিয়োগের বিধান প্রবর্তন করা হয়। এই নবতর পদ্ধতি উত্তরপত্রের সঠিক মূল্যায়নের প্রশ্নটিকে তীব্র করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একটি আয়বর্ধক ও নিবর্তনমূলক কর্মসূচি হচ্ছে, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তীব্র প্রতিযোগিতার বৈতরণি পার হওয়ার অনিশ্চয়তাজনিত ঝুঁকি কাটাতে বিপুলসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী মোটা অঙ্কের ফি দিয়ে অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি হন। তাদের একটা বৃহৎ অংশ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বাতিলের আবেদন করেন।
অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, ভর্তি বাতিলের জন্যও শিক্ষার্থীদের দিতে হয় নির্দিষ্ট ফি। তাছাড়া উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ অযাচিত ফি নির্ধারণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ক্রমান্বয়ে এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সচেষ্ট হয়েছেন যে, অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় পেট্রোলিয়াম করপোরেশন সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব কর্মকাণ্ড সচেতন শিক্ষাবিদদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্বিগ্নতার পারদ চূড়ান্ত উচ্চতায় পৌঁছার অপেক্ষায়। জানা যায়, অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোর মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গভর্নিং বডি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির এ উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কলেজসংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে।
১৯৯২ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ধারা-২৪-এর উপধারা-২-এ অধিভুক্ত কলেজসহ পরিচালনায় গভর্নিং বডি গঠনের কথা বলা আছে। সম্প্রতি দেশ টিভি কর্তৃক আয়োজিত একটি টকশোতে সংশ্লিষ্ট আইনটি প্রণয়নের সময় দায়িত্বে থাকা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, এই আইনটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভেটিং প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল। অথচ এ ত্রুটিপূর্ণ বিধানের দোহাই দিয়েই সরকারি কলেজগুলো পরিচালনায় গভর্নিং বডি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বাস্তবতা হচ্ছে, সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোর ব্যবস্থাপনা এবং পাঠদানের দায়িত্ব পালন করেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তারা। যারা ১৯৮১ সালের ক্যাডার রিক্রুটমেন্ট রুলস অনুযায়ী সিভিল সার্ভিসের অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তার মতো বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে, মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পদায়ন লাভ করেন। তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, বদলি, পদোন্নতি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শাস্তির বিষয়াদিও সুনির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ক্ষেত্রমতো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পাদন করে থাকে। সরকারি কলেজগুলোর অভ্যন্তরীণ কার্যাবলি সংশ্লিষ্ট কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক পরিচালিত হয়। তাছাড়া সরকারি কলেজগুলোর অভ্যন্তরীণ আয়ব্যয়ের বাৎসরিক নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে মুখ্য দায়িত্ব পালন করে সাংবিধানিক পদ Comptroller and Auditor General of Bangladesh-এর নিয়ন্ত্রাধীন প্রতিষ্ঠান লোকাল অডিট ডিপার্টমেন্ট। এমতাবস্থায় সরকারি কলেজ পরিচালনায় বেসরকারি কলেজের মতো গভর্নিং বডি তৈরির বাস্তব কোনো প্রয়োজন নেই। বরং এজাতীয় উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট কলেজগুলো একধরনের দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
আর ১৯৭৭ সাল থেকে বেসরকারি স্কুল-কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) এবং গভর্নিং বডির কার্যক্রমকে বিবেচনায় নিলে নিঃসংশয়ে বলা যায়, সরকারি কলেজে গভর্নিং বডি তৈরির বিধান কার্যকর হলে তা অচিরেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের সামাজিক মর্যাদা, বিত্ত এবং প্রতিপত্তি সৃষ্টির হাতিয়ারে পরিণত হবে। গভর্নিং বডিতে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে সৃষ্টি হবে যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে লড়াই, যা স্থানীয় সামাজিক-রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে বিস্তৃত হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই সরকারি কলেজগুলোয় কর্মরত বিসিএস (সাধারণ) শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান হতাশার স্তূপ অনতিবিলম্বে ধাবিত হবে ৯০ ডিগ্রি কৌণিক উচ্চতায়। ফলস্বরূপ সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোর শিক্ষার মানের অনিবার্য অবনমন নেহায়েতই সময়ের ব্যাপার।
এ সম্ভাব্য চিত্রকে কোনো উর্বর মস্তিষ্কের আকাশকুসুম কল্পনা ভাবার সুযোগ নেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক লাঞ্ছনা, উন্নয়নমূলক কাজে অর্থের হেরফেরসহ যেসব অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে, এর পেছনে রয়েছে এসএমসি ও গভর্নিং বডি। এসংক্রান্ত অসংখ্য ঘটনা থেকে দু-একটা ঘটনা উদাহরণ হিসাবে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
চলতি বছরের ২৫ জুন সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের বখাটে ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতুর হাতে কলেজ প্রাঙ্গণেই মারাত্মকভাবে আহত হন সহকারী অধ্যাপক উৎপল কুমার সরকার। পরে হাসপাতালে মারা যান নিবেদিতপ্রাণ এ শিক্ষক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিতু জানায়, ঘটনার তিন দিন আগে স্কুল প্রাঙ্গণে এক ছাত্রীর সঙ্গে জিতুকে অশালীন অবস্থায় দেখতে পেয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার জিতুর ওই বান্ধবীকে এ পথ থেকে সরে আসতে বলেন, অন্যথায় তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে জানিয়ে দেন।
জিতুর বিষয়ে তিনি গভর্নিং বডির একাধিক সদস্যকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে জিতু শিক্ষককে হত্যা করে। জানা যায়, গভর্নিং বডিতে জিতুর পরিবারের চারজন সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন চাচা গভর্নিং বডির সাবেক চেয়ারম্যান, যার আশকারাতেই ক্রমে বেপরোয়া হয়ে উঠে জিতু। এ ঘটনার পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কলেজটির গভর্নিং বডি ভেঙে দেয়।
পরিচালনা পর্ষদের দাপটে অসহায় শিক্ষকরা বহুক্ষেত্রেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়মের সঙ্গে। সেই গভর্নিং বডি গঠনের মাধ্যমেই অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। যার ভিত্তি ত্রিশ বছরের পুরোনো একটি ত্রুটিপূর্ণ আইন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। প্রস্তাবিত গভর্নিং বডি গঠনের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব এবং আইনগত জটিলতা যৌক্তিকভাবে তুলে ধরে এজাতীয় উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু যতদূর জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত গভর্নিং বডি গঠনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। অথচ শিক্ষাব্যবস্থায় এ বিশাল পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিস্তৃত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন কি না এবং এই জনগুরুত্বপূর্ণ সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে কি না, সেটিও কারও জানা নেই।
১৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার আলোকে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শিক্ষাব্যবস্থায় যে কোনো রকমের পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা এবং বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার। কারণ শিক্ষাব্যবস্থা যে কোনো জাতির জন্যই অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেই প্রতিফলিত হয় জাতির স্বপ্ন এবং সেই স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা। শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিটি উপাদানই পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। যার যে কোনো একটির পরিবর্তন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অপরাপর উপাদানকে প্রভাবিত করে। তবে শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগী ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবর্তন সব সমাজেই কাম্য।
কিন্তু সেই পরিবর্তন অবশ্যই একটি দেশের আর্থসামাজিক-নৈতিক, এমনকি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হওয়া অত্যাবশক। তাই বেসরকারি কলেজের গভর্নিং বডির সুদীর্ঘ নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত, সরকারি কলেজে এ ধরনের কাঠামো গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসা। শিক্ষকদের আত্মসম্মান ও মর্যাদাবোধকে অটুট রেখেই শিক্ষালয়গুলোকে কঠোর জবাবদিহির মধ্যে রাখার প্রয়াস নিতে হবে। কারণ আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মানবোধহীন কোনো মানুষের পক্ষে সুনাগরিক তৈরির কাজ নিতান্তই অসম্ভব। এক্ষেত্রে কেবল সরকারি কলেজে গভর্নিং বডি গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বিরত হলেই চলবে না, বরং দেশের প্রায় ২৮ হাজার বেসরকারি স্কুল-কলেজকেও এসএমসি এবং গভর্নিং বডির বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে হবে।
লেখক: ড. মোহাম্মদ ফজলুর রহমান খান : সহকারী অধ্যাপক, ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ