গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসহ গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চারজন সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করতে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।
এই টিম অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখবে এবং তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করবে বলে জানিয়েছে কমিশনের কর্মকতারা।
কিন্তু এমন সময় দুদক অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে, যার কয়েকদিনের মধ্যে অনেকটা একই ধরণের অভিযোগে একটি মামলায় রায় হওয়ার কথা রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর, শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশের টাকা লোপাট, কল্যাণ তহবিলের অর্থ বরাদ্দ না করে আত্মসাতের মতো অভিযোগ পাওয়ার পর তারা অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ লোপাট।
গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি থেকে দুই হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর।
শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎসহ এসব অভিযোগ জানিয়ে দুদকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দুইজন পরিচালক রয়েছেন।
দুদক যে প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিকে নতুন করে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে একটি মামলা করেছিল।
এক মাস আগেই শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা নিয়ে গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে বহুদিনের এক আইনি বিরোধ আদালতের বাইরে সমঝোতা হয়েছে। এরপর গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে শ্রমিক- কর্মচারীদের ১১০টি মামলা তুলে নেয়া হয়।
দুদকের নিয়ম অনুযায়ী, সোমবার যে অনুসন্ধানকারী দল গঠন করা হয়েছে, তারা এখন কলকারখানা অধিদপ্তরের অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা, তা যাচাই করে দেখবে এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করবে।