রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক আবদুল আওয়াল আনসারী শনিবার লাঞ্ছিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরীক্ষা হলে অসুদোপায় অবলম্বন ও শৃংখলাভঙ্গে বাধা দেয়ায় কপিতয় ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে লাঞ্ছিত করে বলে একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শনিবার নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালে ৪০১ নম্বর কক্ষে অসদোপায় অবলম্বনের চেষ্টা করেন কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী ফাহিম। ওইসময় কর্তব্যরত শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি আবদুল আওয়াল আনসারী এবং সহকারী অধ্যাপক তানবিরুল হক তাকে নকলে বাধা দেন। এর পর ফাহিম পরীক্ষার হলেই চিৎকার-চেঁচামেচি করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতিকে গালাগাল করেন। পরীক্ষা হলেই ফাহিম ফোন করে তার সহযোগীদের কলেজে ডেকে নেন। ফাহিমের ডাকে কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনি, ছাত্রলীগ নেতা তরুণ, বাপ্পী কলেজে হাজির হন। তারা শিক্ষককে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে গালাগাল করেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনেই ফাহিমের নকল ধরার জন্য তারা ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন শিক্ষককে। প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষক জানান, অধ্যাপক আওয়াল আনসারীকে শেষ পর্যন্ত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা নকলবাজ ছাত্রলীগ কর্মী ফাহিমের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। ক্ষমা চেয়ে অধ্যাপক আনসারী সোজা কলেজ থেকে বাসায় চলে যান। ঘটনার পর থেকে অধ্যাপক আনসারীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে আনসারীর সহকর্মী সহকারী অধ্যাপক তানবিরুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে চাননি এই শিক্ষক।
ঘটনার ব্যাপারে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার মতো ঘটনা ঘটেনি। তবে পরীক্ষার্থী ফাহিম এর আগেও বিধি ভঙ্গ করে একটি পরীক্ষা দেয়নি। শনিবারও সে পরীক্ষা হল থেকে বের হয়ে যেতে চেয়েছিল। নকলের চেষ্টা করেছিল কিনা সেটা তিনি জানেন না। উপাধ্যক্ষ আরও বলেন, ইনকোর্স পরীক্ষায় হল থেকে বের হওয়ার কোনো নিয়ম নেই। সে কারণে পরীক্ষা হলে কর্তব্যরত শিক্ষকরা তাকে বাধা দেন। পরে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতা কলেজে এসে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান করেন। ঘটনার ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করলে কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনি কিংবা ফাহিমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।