পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড নিয়ে এমপিওভুক্ত প্রভাষকদের সমস্যার সমাধান চাই - দৈনিকশিক্ষা

পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড নিয়ে এমপিওভুক্ত প্রভাষকদের সমস্যার সমাধান চাই

জহির উদ্দিন হাওলাদার |

বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক প্রাপ্তি থাকলেও অপ্রাপ্তি আছে বেশ কিছু। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করেছেন, ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা দিয়েছেন, ছয় শতাধিক স্কুল/কলেজ সরকারিকরণ করেছেন এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২ হাজার ৭৩০টি নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছেন। এছাড়া (কোভিড-১৯) করোনা দুর্যোগে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীকে বিশেষ অনুদান দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকার শিক্ষকদের জন্য অনেক কিছু করেছেন বলেই শিক্ষক সমাজ আরও কিছু প্রত্যাশা করে। তাই প্রত্যাশার জায়গা থেকে প্রভাষকদের পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করছি। 

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৫:২ অনুপাত প্রথার কারণে একই যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ প্রভাষক সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছেন। এই কারণে প্রভাষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ কাজ করলেও টাইমস্কেল প্রাপ্তিতে কারও কোনো সমস্যা হতো না। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের (২০১২ ও ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সংশোধিত) এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, এমপিওভুক্ত প্রভাষকরা ৫:২ অনুপাতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন এবং অন্যান্য প্রভাষকরা শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ৮ বছর পূর্তিতে ৯ম গ্রেড থেকে ৭ম গ্রেড প্রাপ্য হবেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের এমপিও নীতিমালা অনুসারে ৮ম গ্রেডে কোনো প্রভাষককে বেতন-ভাতা দেয়া হতো না। শুধু নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপারিটেনডেন্ট এই তিনটি পদের শিক্ষকদের ৮ম গ্রেডে বেতন ভাতার সরকারি অংশ প্রদান করা হয় এবং গ্রন্থাগারিকদের চাকরিকাল ৮ বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড হিসাবে ৯ম থেকে ৮ম গ্রেড প্রদান করা হতো। কিন্তু এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো ২০১৮ অনুসারে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নিয়ম পূর্বের ন্যায় রাখা হলেও পদোন্নতি বঞ্চিত প্রভাষকদের উচ্চতর গ্রেড প্রদানে চরম বৈষম্য লক্ষ্ করা গেছে।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নীতিমালা অনুসারে চাকরিকাল ৮ বছর পূর্তিতে কিছু সংখ্যক প্রভাষক ৫:২ প্রথা অনুসারে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন এবং পদোন্নতি বঞ্চিত প্রভাষকরা চাকরিকাল ১০ বছর পূর্তিতে ৯ম গ্রেড থেকে ৮ম গ্রেড প্রাপ্য হবেন। এটা একটা অমানবিক সিদ্ধান্ত। একই যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে একজন সহকারী অধ্যাপক হবেন আর অপরজন পদোন্নতি না পাওয়ায় একবুক জ্বালা নিয়ে আরও অতিরিক্ত ২ বছর শিক্ষকতা করার পর ১০ বছর পূর্তিতে ৯ম গ্রেড থেকে ৮ম গ্রেড পাবেন। অর্থাৎ ১০ বছর পরে তাঁর আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি পাবে মাত্র ১০০০ টাকা। ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডে বেতন প্রাপ্তির পর পরবর্তী ৬ বছরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত না হলে ৬ বছর পূর্তিতে বেতন গ্রেড ৮ থেকে ৭ প্রাপ্য হবেন। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

দৈনিক শিক্ষার ফেসবুক ও ইউটিউবের লাইভ আলোচনা ও নিউজের কমেন্টে দেখেছি হাজার হাজার প্রভাষক এ ব্যাপারে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রভাষক ৮ম গ্রেড প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন। এক কথায় প্রভাষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দানা বেঁধেছে। এই অসন্তোষ দূর করতে না পারলে, শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়লেও পড়তে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসম্মত পাঠদান বাধাগ্রস্তও হতে পারে। 

তাই এই সংকট নিরসনে বাস্তবসম্মত, বাস্তবায়নযোগ্য এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর সাথে সংগতি রেখে একটি প্রস্তাব রাখছি, এমপিওভুক্ত প্রভাষকদের এমপিওভুক্তির ১০ বছর সন্তোষজনক চাকরি পূর্তিতে বেতন গ্রেড ৯ম থেকে ৭ম গ্রেড দেয়া এবং পরবর্তী ৬ বছর পূর্তিতে ৫:২ অনুপাত প্রথা রহিত করে সব প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়ার অনুরোধ করছি। এই প্রস্তাবনাটি সুবিবেচনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। এই প্রস্তাবনাটি বাস্তবায়িত হলে এমপিওভুক্ত প্রভাষকদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ ও হতাশা থাকবে না বলে বিশ্বাস করি। 

লেখক :  জহির উদ্দিন হাওলাদার, মহাসচিব, বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন।

আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি - dainik shiksha আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে - dainik shiksha সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড - dainik shiksha মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি - dainik shiksha ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036680698394775