“পেটে ক্ষুধা চোখে লজ্জা” - দৈনিকশিক্ষা

“পেটে ক্ষুধা চোখে লজ্জা”

মোস্তাফিজুর রহমান শামীম |
Mostafuzir Rahman Shamim
মোস্তাফিজুর রহমান শামীম, প্রভাষক

বাবা মা দুজনেই অসুস্থ। বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। একমাত্র সন্তান এমপিওভুক্ত কলেজ শিক্ষক। চাকরির সুবাদে বাবা-মা কে সঙ্গে নিয়ে শহরে বসবাস। মা বাবাকে নিয়ে একসাথে থাকাটাই মনেহয় জীবনের সবচেয়ে বড় তৃপ্তি।

কৃতজ্ঞতা জানাই চাকরিদাতাদের প্রতি। ছোট সংসার খুব ভালভাবেই চলে যায়। স্ত্রী, সন্তানদেরও তেমন আবদার নেই। কারন যেভাবেই হোক সবার সব চাহিদাই পূরণ হয়ে যায়। বাড়ি ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ আনুসাঙ্গিক খরচে বেতনের টাকা বিনা শর্তে শেষ হয়ে যায়। বাকী থাকে শুধু খওয়া দাওয়া ও পোশাক- আশাক। এ আর এমন কি সমস্যা, ছাত্রের বাবার চালের দোকান আছে। সেখান থেকেই প্রতি মাসে বাকীতে চাল কেনা হয়। আমাদের বেঁচে থাকার পেছনে তার অনেক অবদান। মুদির দোকানও বাকী, কারন সেটাও সহকর্মীর মামার দোকান। পোশাকের দরকার, আছে সহকর্মীর ভাইয়ের দোকান।  বাকীতে সব পোশাক তার কাছ থেকেই নেয়া হয়। আমদের লজ্জা ঢাকার জন্য তারও অনেক অবদান রয়েছে। এ সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি একমাত্র শিক্ষকতা পেশার কারনে। কিন্তু কতদিন এই সুবিধা পাব। কতদিন টিকে থাকবে এই সম্মান। সবাইকে বলে রেখেছি আর কটাদিন সবুর করুন রসুন বুনেছি।

এখন রসুন তোলার সময়, গাছ আছে কিন্তু রসুন নাই। পেটে প্রচণ্ড ক্ষুধা তবুও বলতে পারছি না। খাবারের চাহিদা মেটাতে না পেরে রাতে না খেয়ে ঘুমাই। হাঁসতে হাঁসতে বলি ডায়েট করছি। সকালে ঘুম ভাঙলেই শুরু হয় দুঃচিন্তা। কি বাজার করব, কিভাবে কিনব, টাকা কিভাবে যোগাড় করব, যদি বাড়িতে মেহমান আসে! সবজিতো বাকীতে কিনতে পারব কিন্তু মাছ মাংশ কেউ বাকীতে দেবে না। পাশের বাড়ির সরকারি চাকরিজীবী ভাই যখন ডেকে বলেন, বাজারে সাত মন ওজনের এঁড়ে গরু জবাই হয়েছে, চলেন নিয়ে আসি। আমাকে বলতে হয়, ফ্রিজে জায়গা নেই, তাছাড়া আমরা গরুর মাংস তেমন পছন্দ করি না। ধূসর পে-স্কেল কে এখনও মনের মধ্যে লালন করছি। বকেয়া বেতনের টাকা দিয়ে সব ধার শোধ করে দিব। নগদ টাকা দিয়ে বাজার করব। যেদিন পে-স্কেলের টাকা হাতে পাব সেদিন পাঁচজন ফকিরকে পেটভরে খাওয়াবো। রাতে আর না খেয়ে থাকবো না।

আমাকে বাঁচতে হবে। এখনও অনেক ক্লাস নিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের মানুষের মতো মানুষ বানাতে হবে। আমাদের হাতেযে এখনও অনেক কাজ বাকী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই আর্তনাদ পাঁচ লক্ষ শিক্ষকের, যারা দেশের নব্বইশতাংশ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছেন। আমাদের দয়া করুন, আমাদের বাঁচতে দিন।

লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান শামীম, প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, ভেড়ামারা কলেজ।

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039818286895752