প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে শিক্ষার সব স্তরে ব্লেন্ডেড এডুকেশন : শিক্ষামন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে শিক্ষার সব স্তরে ব্লেন্ডেড এডুকেশন : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, কাজের জগত থেকে বারবার নতুন কিছু শেখার জন্য ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। সেখানে ব্লেন্ডেড এডুকেশনের সুযোগ রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে শিক্ষার সব স্তরে ব্লেন্ডেড এডুকেশন বাস্তবায়নের কাজ শুরু করব। 

তিনি আরও বলেছেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে, সম্ভাবনাও আছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার মূল হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা। সেই শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগ করছে। আগামী দিনে আরও অনেক বিনিয়োগ করবে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু গড় জাতীয় আয়ের শতকরা চারভাগ বিনিয়োগ করার কথা বলেছেন। এখন বলা হয়, অন্তত ৬ ভাগ বিনিয়োগ করতে। কিন্তু আমরা শতকরা তিন ভাগের বেশি এখনও করতে পারছি না। তবে, আগামী দিনে নিশ্চয়ই পারব, ইনশাআল্লাহ। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে শিক্ষাই হবে আগামী দিনের মেগা প্রজেক্ট।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার সে খরচ বহন করে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সে খরচ বহন করতে হয়। কোনো কিছুই একেবারে বিনামূল্যে হয় না। কিন্তু তার মূল্য আমরা দিতে পারি না। শিক্ষার ক্ষেত্রেও যে মূল্য দেওয়া প্রয়োজন, তার প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া দরকার। তার মানে এই নয় যে, আমরা অতিরিক্ত উচ্চমূল্য ধারণ কিংবা বিনামূল্যে দেব।

তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে পড়বার সংস্কৃতি থেকে সরে আসা দরকার, ঠিক তেমনি যাদের দেবার ক্ষমতা আছে, শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা আছে, তারা সেই ব্যয়ভার বহন করেই শিক্ষা গ্রহণ করবেন। বঙ্গবন্ধু যে কথাটি বারবার বলে গেছেন, দারিদ্র্য যেন কখনো কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করবে। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার বদ্ধ পরিকর। কাজেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যয়ের বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে। বিষয়টিকে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। 

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিশাল সম্ভাবনা। আজকে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে, তারা যখন কর্মজগতে প্রবেশ করবে, এখন যেই কাজগুলো দেখি তার শতকরা ৬৫ ভাগ তখন আর থাকবে না। তার মানে আরও নতুন নতুন কাজ আমাদের সামনে থাকবে। আমাদের কাজ হলো, কি কাজ থাকবে সেটি বুঝে নিয়ে তার জন্য প্রস্তুত হওয়া। 

দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত শিক্ষার্থীদের কর্মজগতের জন্য প্রস্তুত করে দেয়া। শুধুমাত্র ডিগ্রি দেয়াই যথেষ্ট নয়। চাকরিদাতা আর চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কোথায় যেন ফারাক থেকে যায়। সেখানে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের সার্টিফিকেট কোর্স বা ডিপ্লোমাধারীরা চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। কারণ কিছু বিশেষ দক্ষতা তারা অর্জন করতে পারছেন। তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সে দক্ষতাগুলো দিচ্ছে। আমরাও যেন শিক্ষার প্রতিটি স্তরে শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতায় দক্ষ করতে পারি, সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসছি।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের শিল্পকারখানা, কর্মজগতের যে চাহিদা রয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউজিসি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। অনেক সার্টিফিকেট কোর্স নেয়ার সুবিধা থাকতে হবে। নানান মেয়াদী ডিপ্লোমা দেয়ার সুবিধা থাকতে হবে। কাজের জগতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধাপে ধাপে সেগুলোকে বদলাতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবন হতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা অনেকগুলো বাধা তৈরি করে রেখেছি। একবারের বেশি পরীক্ষা দেয়া যাবে না। এইচএসসি পরীক্ষার পরে এক বছর গ্যাপ পড়লে পরীক্ষা দেয়া যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে তার নামের মতোই উদার হতে হবে। যেকোনো বয়সী শিক্ষার্থী তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেই ভর্তি হবেন। তাকে সে সুযোগ দিতে হবে। এটি অবারিত করা হলে কারিগরি শিক্ষা শেষ করেও অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়ে চিন্তা করবে। 

গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। কিন্তু সংক্ষিপ্ত পথে সাফল্যের জায়গায় পৌঁছানোর জন্য কেউ এমন কিছু করবেন না, যাতে আপনার সাফল্য কলুষতায় আক্রান্ত হয়। নিজের পাশাপাশি আপনার পরিবার, সমাজ, দেশ এমনকি বিশ্বের প্রতি আপনাদের দায় রয়েছে। আশা করি, আপনারা সেই বিষয়ে সচেতন হবেন।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। 

চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দিল আফরোজ বেগম, বাংলাদেশ এক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুল আজিজ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল বাশার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শামীম আরা হাসান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আল-আমিন মোল্লাসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের সদস্য ঢাকা-৮ আসনের এমপি রাশেদ খান মেনন। সমাপনী বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি মো. নজরুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানে ৬৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে গোল্ড মেডেল দেয়া হয়। এর মধ্যে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ৩ জন এবং ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ৬৩ জন।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037741661071777