লক্ষ্মীপুরের নুরুল্লাপুর আঞ্জুমানারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা। পারস্পরিক দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ১০ই অক্টোবর কমিটি প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করে। অপরদিকে প্রধান শিক্ষক এই বহিষ্কারাদেশকে অবৈধ ও বে-আইনি দাবি করেন। দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান ও স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নে অবস্থিত নুরুল্লাপুর আঞ্জুমানারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফ উদ্দিনের সঙ্গে বিদ্যালয়ের সভাপতি এমএ মোমেন ও সদস্যদের মধ্যে পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। গত বছরের শেষদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে পক্ষপাতমূলক আচরণ করায় ক্ষুদ্ধ প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করে আদালতে মামলা করেন। এ নিয়ে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এই বিরোধের জের ধরে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সদস্যরা প্রধান শিক্ষক সাইফ উদ্দিনকে বিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করার জন্য গত ২৫শে সেপ্টেম্বর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করে। এদিকে প্রধান শিক্ষক সাইফ উদ্দিন জানান, যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে তা মোটেই সত্য নয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি এমএ মোমেন একজন বিদেশি নাগরিক। বিধি লঙ্ঘন করে তিনি এই বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ আঁকড়ে ধরে আছেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার পদ ধরে আছেন। তিনি কানাডারও নাগরিক।
বিদ্যালয়ে তিনি ঠিকমতো আসেন না। এদিকে প্রধান শিক্ষকের অজান্তে কমিটি গত ১০ই অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি একটি সভাকরে প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যহতি প্রদান করে সহকারি প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র মজুমদারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়। প্রধান শিক্ষক সাইফ উদ্দিন উক্ত দিবসে অন ডিউটিতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে বিদ্যালয়ের কাজে থাকার সুযোগে এই কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি কোনো অপরাধ করলে বিধি মোতাবেক কমিটি তাকে পর পর তিনটি কারণ দর্শানোর নোটিশ করবেন। কিনু্ত তা না করে তাকে বে আইনিভাবে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্য সচিব ছাড়া কোনো সভা আহ্বান করার কোনো ক্ষমতা কমিটির নেই।
তাই তিনি কমিটির এই অবৈধ আদেশ মানতে বাধ্য নন। তিনি কমিটির বে আইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বোর্ড চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।এদিকে আগামী ১লা নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের জে এস সি পরীক্ষা শুরু হবে। একই সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষাও চলছে। কয়েক দিনের মধ্যে ফরম পূরণ শুরু হবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।