প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বরখাস্ত হচ্ছেন। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। শিগগিরই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দৈনিক শিক্ষাডটকমের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাাপক নেহাল আহমেদ।
চলমান এসএসসি পরীক্ষার একাধিক বিষয়ের প্রশ্নফাঁস হয়েছে। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. লুৎফর রহমানের কক্ষ থেকে এখনও অনুষ্ঠিত না হওয়া ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নের প্যাকেট জব্দ করা হয়েছে। একটি ছাড়া সব প্যাকেটের মুখ খোলা ছিলো। ইতোমধ্যে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা জানিয়ে কেন্দ্রসচিবসহ চারজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। প্রশ্নফাঁসের এ ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় তোলপাড় চলছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত কেন্দ্র সচিবসহ তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার জেরে গতকাল বুধবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড চলমান এসএসসির গণিত, কৃষি, পদার্থ ও রসায়ন- এ চারটি বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে। বাকি পরীক্ষাগুলো রুটিন অনুযায়ী হবে। উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্ন নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের স্থগিত হওয়া চারটি বিষয়ের পরীক্ষা ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে, অন্যান্য বোর্ডের পরীক্ষা যথারীতি চলবে।
এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ ঘটনায় তদন্ত করেছেন। তিনি একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। তাতে আমরা দেখতে পারছি আমাদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কিছু গাফিলতি আছে। সে কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার একটি প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় অনেকেই জড়িত থাকতে পারে। পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন সর্টিং করা হয়। আমরা যেটা জানতে পেরেছি অভিযুক্ত কেন্দ্র সচিব সর্টিংয়ের সময় অন্য দিনে ছোট ছোট যে বান্ডেলগুলো থাকে, সেখান থেকে প্রশ্ন নিয়ে গেছেন। এ প্যাকেটগুলো কাটা ছাড়া কোনো পথ নেই। আপনারা জানেন এগুলো ফয়েল পেপারের প্যাকেটে থাকে। সেখানে আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন বা আরও যারা উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা ছিলেন তারা সংশ্লিষ্ট কিনা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।

অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আরও বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থানার ভেতর উপস্থিত ছিলেন। তার সামনেই প্রশ্ন সর্টিং হয়েছে। যখন ফয়েল পেপারের সিলগালা খুলে আবার বান্ডেল করতে হয়। কিন্তু তার সামনে থেকে কিভাবে প্রশ্ন নিয়ে যায়। এখানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার গাফিলতি ছিলো।
তিনি আরও জানান, সরকার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা শোনার পরই ব্যবস্থা নিচ্ছে। যশোরে একটু ছোট ঘটনা ঘটেছে, সে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিলো। এখানেও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ফাঁস হওয়ার প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রশ্নের একাধিক সেট যেহেতু থাকে তা শুধু প্রিন্ট করতে হয়। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা হবে না।
এদিকে এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমানের সঙ্গে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।