মতপ্রকাশের বিরোধিতা সভ্যতা নয় - দৈনিকশিক্ষা

মতপ্রকাশের বিরোধিতা সভ্যতা নয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

যে সমাজে স্বাধীন মত প্রকাশ বা যুক্তি-তর্কের সুযোগ থাকে না, সেই সমাজ কোনোদিন উন্নত হতে পারে না। অতীতে ইউরোপে সমাজে প্রচলিত মতের বিরোধী মত প্রকাশ করতে গিয়ে সক্রেটিস, ব্রুনো, গ্যালিলিও, ডারউইন, মার্কস, অ্যাঙ্গেলসসহ বহু দার্শনিক, বিজ্ঞানী, লেখক ও তাত্ত্বিককে চরম নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে। এদের মধ্যে সক্রেটিসকে হেমলক পানে মৃত্যুবরণে বাধ্য করা হয়েছে, ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, গ্যালিলিওকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, মার্কস ও ফ্রয়েডকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। হিটলারের নািস আর মুসোলিনীর ফ্যাসিস্টদের কারণে জার্মানি ও ইতালি থেকে পালিয়েছিলেন অসংখ্য বুদ্ধিজীবী। অথচ শেষপর্যন্ত প্রচলিত মতবিরোধী ব্যক্তিদের ধ্যান-ধারণাই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতীতের এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত হওয়ায় এসব দেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাবিরোধী বক্তব্য ছাড়া সবাই যে কোনো বিষয়ে স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারে। রোববার (১৯ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৯০ বছর বয়সী নাগরিকদের বড় একটা অংশই চরম নীতিহীন এবং অসত্। নিজের মতের বাইরে স্বাধীন মত প্রকাশ এদের কাছে বিরাট অপরাধ হিসেবে বিবেচিত এবং যে কোনো উপায়ে ভিন্নমতের অনুসারীদের শায়েস্তা করতে চায়। একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র নিয়ে পড়ার সময় সেই বিভাগের সত্তরোর্ধ্ব বয়সের এক চেয়ারম্যান আমার বইতে লেখা বিষয়ের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করায় আমার বিরুদ্ধে সবরকম শত্রুতা করেছিলেন। এমনকি সন্ত্রাসী লেলিয়ে দেওয়ার মতো ঘৃণ্য কাজ করা থেকেও বিরত হননি।

অতীত আমলেও বিভিন্ন পত্রিকায় এবং ম্যাগাজিনে কার্টুন আঁকা যেত। আমেরিকায় জর্জ ওয়াশিংটন বা ট্রাম্প যে কারো বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যায়। সম্প্রতি হলিউডের এক পরিচালক ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ছবির প্রধান ভাড়রূপী খলচরিত্রের তুলনা করে গণমাধ্যমে সাক্ষাত্কার দিলেও এজন্য ট্রাম্প তাঁকে কারাগারে ঢোকায়নি।

ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গান্ধীর অহিংস নীতির সমালোচনা করে তাঁকে ইংরেজদের দালাল হিসেবে বিভিন্ন চলচ্চিত্রেও উপস্থাপনা করা হয়েছে। কিন্ত তাদের কাউকেও মারধর বা হত্যা করা হয়নি। কারণ কারো সত্য বা মিথ্যা মত প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসে কারো স্থান পরিবর্তিত হয় না। যার অবস্থান যেখানে হওয়া উচিত, সেখানেই থাকে। কিন্তু ভিন্নমত প্রকাশকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় পদে পদে।

বড়োদের আচরণ থেকেই ছোটোরা এই শিক্ষাই পেয়েছে যে, ভিন্ন মত প্রকাশকারীদের যে কোনো উপায়ে শাস্তি দেওয়া যুক্তিসঙ্গত। এরাই পুরো দেশে মত প্রকাশের ওপর আঘাতের সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে। পরিবার, প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দলে এদের সংখ্যাই বেশি। আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা এই মানসিকতারই চূড়ান্ত পরিণাম। সুতরাং শুধু ছোটোদের দায়ী না করে আগে বড়োদেরই সচেতন হওয়া উচিত।

লেখক: অনল চৌধুরী, ঢাকা

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00335693359375