ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যয়নরত মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা শিক্ষার্থীদের তিন বছর থেকে বন্ধ হয়ে থাকা বৃত্তি ফের চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মাদরাসা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা আনাস ইবনে মুনীরের সঞ্চালনায় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, আলিম পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত মাদরাসাশিক্ষার্থীরা বিগত ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ সেশনের বৃত্তির টাকা পাচ্ছেন না। মাদরাসা বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে বৃত্তির টাকা পাচ্ছেন না তারা। একাধিকবার মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, মাউশি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তারা দাবি জানানোর পরও কোনো সুরাহা হয়নি। বরং কর্তৃপক্ষ চরম অবহেলা ও অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে বিষয়টিতে।মানববন্ধনে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে মাদরাসাশিক্ষার্থীরা অতীতেও অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে, এখনো হচ্ছে। বৃত্তির টাকা কোনো দয়া দক্ষিণা নয়, এটা আমাদের অধিকার। আমাদের অধিকার আমাদের ফিরিয়ে না দিলে আমরা প্রয়োজনে হাইকোর্টে রিট করে হলেও সেটা আদায় করব।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল ওহাব বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃত্তির টাকা পেয়ে পড়াশোনা করছে কিন্তু মাদরাসাশিক্ষার্থীরা প্রাপ্ত বৃত্তি পাচ্ছে না। এর মাধ্যমে তাদের মেধার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আফরাজ আল মাহমুদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মাউশি, মাদরাসা অধিদফতর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবার কাছেই গিয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার তো পাচ্ছিই না, বরং লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের শিকার হচ্ছি। শিগগিরই আমাদের বৃত্তির টাকা আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে বৃত্তির টাকা পাচ্ছেন না মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করে সাধারণ শিক্ষায় যাওয়া শিক্ষার্থীরা। ২০১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ সালে আলিম (উচ্চমাধ্যমিক) পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রেখে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাচ্ছেন না। একইসময়ে বৃত্তি পাওয়া অন্যান্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার বৃত্তি পেলেও ‘অদৃশ্য’ কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ সমস্যার শুরু হয়। গত তিন বছরেও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। সমাধানে কে এগিয়ে আসবে,
সেটা নিয়েও আছে দ্বন্দ্ব। এর ফলে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মাদরাসাশিক্ষার্থী বৃত্তির টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা বোর্ড ও মাউশিতে গেছে। কিন্তু ফিরেছে খালি হাতে।