শর্ত জুড়ে দিয়েই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেলভুক্তির আদেশ জারি করেছে সরকার।
পাঁচ শর্তের প্রথমটি হলো : “এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের যোগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়নের বিষয়টি নিশ্চিতকরণ এবং এ লক্ষ্যে দ্রুততার সাথে এমপিও নির্দেশিকা হালনাগাদ করে তা অর্থ বিভাগকে অবহিত করতে হবে।”
বাকী চfর শর্ত সরাসরি শিক্ষকদের জন্য নয়। ওগুলো শিক্ষা প্রশাসনের এমপিও সংশ্লিষ্ট কাজের ও কর্মকর্তাদের জন্য জবাবদিহিমুলক।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ই এম আই এস সেলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে এমপিওভুক্ত সাধারণ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার সংখ্যা ছাব্বিশ হাজার একানব্বইটি [কারিগরি প্রতিষ্ঠান বাদে]। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত তিন লাখ ঊনআশি হাজার পাঁচশ’ তিনজন শিক্ষক ও এক লাখ এক হাজার একশ’ তিনজন কর্মচারী। তারা সবাই নতুন স্কেল পাওয়ায় সরকারের জুড়ে দেয়া এই শর্তের বিরোধীতা করে আসছিল। আন্দোলনেরও হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় শেষ পর্যন্ত শর্তেই অটল থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুদান-সহায়তা বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২৮ মার্চ জারিকরা এক আদেশে পাঁচটি শর্তের কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই শর্তের প্রেক্ষিতেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শাখা-৩ (বাজেট) থেকে ২৯ মার্চ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন স্কেলভুক্তির আদেশ জারি করেছে। আদেশে সই করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহাকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান। আদেশটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও এক কপি পাঠানো হয়েছে। আদেশের কপি দৈনিকশিক্ষার হাতে রয়েছে। বাকী চারটি শর্ত সরাসরি শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে যুক্ত নয় বরং শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিবর্গ ও এমপিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য প্রতিপালনীয় ও জবাবদিহিতামূলক।
মার্চ মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাংবাদিক ও শিক্ষক নেতাদের জানানো হয়েছিল শর্ত ছাড়াই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের জুলাই থেকেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন পেস্কেলের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শর্ত ছাড়াই পেস্কেলভুক্ত করায় এবং আট মাসের বকেয়া দেয়ায় জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট গত সপ্তাহে আনন্দ মিছিল করেছে রাজধানীতে।
অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত দীর্ঘদিন যাবত বলে আসছেন, এমপিওখাতে ফিবছর কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়। প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য ও অযোগ্য হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওর নামের রাজকোষ থেকে কোটি কোটি টাকা হতিয়ে নিচ্ছে। এ প্রেক্ষিতেই এমপিও পদ্ধতি বাতিল ও নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ রাখছেন না অর্থমন্ত্রী।
মূল্যায়ন বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, এমন অনেক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীর চেয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা বেশি এবং বছরের পর বছর একই অবস্থা চলে আসছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এতই ভালো যে তাদের এমপিও দেওয়া উচিত না ।
মূল্যায়ন করতে গেলে এমন হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিও হারাবে।