মাদারীপুরের সদর উপজেলার চর হোগল পাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অর্ধেক টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদের স্থানীয় এজেন্ট দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে জানা যায়, এই বিদ্যালয়ে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এদের বিদ্যালয়মুখী হতে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রেণিভেদে জনপ্রতি ১৪৫০ টাকা থেকে ১৯৫০ টাকা উপবৃত্তি ও স্কুল ড্রেস কেনার জন্য দেওয়া হয়।
টাকা পেতে অভিভাবকদের প্রত্যেককে খুলতে হয়েছে একটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। আর এই সুযোগকে কাজে লাগায় বিদ্যালয়ের পাশে বাংলাবাজার এলাকার এজেন্ট আবুল হোসেন খলিফা (৩৫)। তিনি অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কৌশলে জেনে নেন সবার গোপন পিন নাম্বার।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আফরোজা বলে, ‘১৯৫০ টাকার মধ্যে ৯০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা দোকানদার আবুল রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আর কোনো টাকা আসে নাই। ’
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মীম আক্তারের মা রওশনারা বেগম বলেন, ‘আমরা গ্রামের মানুষ এত কিছু বুঝি না। আবুলের দোকানে গেলে এক হাজার টাকা দিয়েছে। পরে অন্যদের থেকে জানতে পেরেছি ১৯৫০ টাকা আসছে। ’
শিক্ষার্থী রাহুল ও সুমাইয়া চাচা সুজন বলেন, ‘আমার ভাতিজি ও ভাতিজার টাকা আসছে। একজনের টাকা দিয়েছে, আরেকজনের টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করেছে। ’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উপবৃত্তির টাকা এজেন্ট আবুল কৌশলে আত্মসাৎ করেছেন। ’
তবে এ ঘটনার পর আবুল খলিফার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয় স্থানীয়রা। বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি তাঁকে। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমি অল্প কয়েকজনের কিছু টাকা নিয়েছিলাম তা ফেরত দিয়েছি। আমার ভুল হয়েছে, সে জন্য আমি সবার কাছে মাফও চেয়েছি। তার পরও স্থানীয় মাদবররা আমাকে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করেছে। এই জরিমানার একটি অংশ এর মধ্যে মাদবররা নিয়ে গেছে। ’
মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাশিদা খাতুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং অভিযুক্তের এজেন্ট বাতিল করা হবে। ’
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কিংবা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। কোনো অবস্থায় এ ধরনের প্রতারককে ছাড় দেওয়া হবে না। ’