নিজ দলের কর্মী হত্যা ও ডাকাতি মামলার আসামি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। এছাড়াও বির্তকির্তরাও কমিটিতে পদ পেয়েছেন।
জানা গেছে, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল ছাত্রলীগ কর্মী নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত (চার্জশিট) আসমি। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মশিয়ুর রহমান হলে ডাকাতির মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি।
সহসভাপতির পদ পাওয়া আল মামুন সিমনও হলে ডাকাতির মামলার আসামি। ত্যাগী, যোগ্য ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিতদের কমিটিতে স্থান দেয়ায় ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আগামী এক বছরের জন্য যবিপ্রবি ছাত্রলীগের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটিতে সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সাল সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর ছাত্রলীগের এই নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে। কমিটি ৪ জন সহসভাপতি আফিকুর রহমান অয়ন, নাজমুস সাকিব, মেহেদী হাসান ও আল মামুন সিমন। তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শিহাব, এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপ ও নূর মোহাম্মদ টনি। দুই জন সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয় ও মুরাদ পারভেজ।
এই কমিটি নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও ত্যাগী ও বঞ্চিতরা প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তাদের দাবি, অনিয়মিত ছাত্র, হত্যা ডাকাতির মামলার আসামি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের নিয়ে কমিটি হয়েছে। বাদ পড়েছেন ছাত্রলীগের সক্রিয় ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কর্মীরা।
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুলাই দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এই মামলায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওই তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে তানভীর ফয়সালের নাম।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবরে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের নেতৃত্বে হল ডাকাতি হয়। শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০০টি ফোন, ১০০টি ল্যাপটপ, নগদ টাকা ডাকাতি করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর ৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ২৫ জনের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় ১১ নম্বর আসামি তানভীর ফয়সাল। ১০ নম্বর আসামি করা হয় সদ্য ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি আল মামুন সিমনকে। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বহিস্কৃত হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো আদালতে দোষী প্রমাণিত হইনি। রাজনৈতিকভাবেই এসব মামলায় আমার নাম জড়ানো হয়েছে। মামলায় জামিনে আছি।