রাজবাড়ীর পাংশায় এক শিক্ষককে ব্যাপক মারধরের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার সময় এক পরিবারের কাছ থেকে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে এর প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষককে তারাই আবার মারধর করে। এ ঘটনায় গত রবিবার থানায় মামলা করা হয়।
পাংশা থানার ওসি মোফাজ্জেল হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, এক সপ্তাহ আগে জেলার পাংশা জর্জ পাইল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা ভারতে চলে যায়। দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে পাশের কুষ্টিয়ার খোকশা এলাকায় পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ফারুক প্রামাণিকের নেতৃত্বে নগদ অর্থসহ বেশ কিছু মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনা জানতে পেরে শিক্ষক তপন কুমার সরকার দুঃখ প্রকাশ করে বিষয়টি আরো কয়েকজনকে অবহিত করেন। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফারুক ও তার সহযোগীরা গত শনিবার রাতে তপনের ওপর হামলা চালায়।
ওসি আরো বলেন, ওই ঘটনায় গত রবিবার বিকেলে শিক্ষকের বাবা ও পাংশা পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শিবনাথ সরকার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে ওই রাতেই মামলার আসামি পাংশা উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ফারুক প্রামাণিক, পারনারায়ণপুর গ্রামের ওয়ালিদ মণ্ডল, একই গ্রামের আবু সাঈদ মণ্ডল, কুড়াপাড়া গ্রামের সোহান শেখ, শফিকুল ইসলাম শফি ও রাকিব হাসান অন্তরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা শিক্ষক তপনকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তারা বলেছে, ‘বড় ভাইয়ের নির্দেশে’ তারা ওই শিক্ষককে মারধর করেছে। তবে কে এই বড় ভাই, তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। সোমবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে শিক্ষক তপন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর সেরে উঠতে ছয়-সাত মাস লাগবে বলে জানা গেছে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে প্রধান আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে।