ফরিদগঞ্জে সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বখাটেদের উৎপাত বেড়ে গেছে। উপজেলায় রয়েছে ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫২টি মাদ্রাসা, আটটি কলেজ ও ১৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বখাটে এমনকি অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার জন্য অবস্থান করছে। বিশেষ করে স্কুল শুরুর সময় ও ছুটির সময় বখাটেরা আড্ডা দিয়ে সময় পার করছে। মেয়েদের গতিরোধ, শিশ দেওয়া, কুরুচিপূর্ণ কথা বলা, মোবাইলে মিউজিক বাজানোর মতো অপকর্ম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের অবসান ঘটেছে এদের উৎপাতে।
এই পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠায় থাকা অভিভাবকদের মধ্যে খাজুরিয়া এলাকার রোকেয়া, আদশা এলাকার মহসীন মোল্লাসহ অনেকেই বখাটেদের হাত থেকে রক্ষাকল্পে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে প্রশাসনের নজরদারির জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, প্রতিনিয়তই বখাটেদের দ্বারা ছাত্রীরা উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে। এতে বেশির ভাগই আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে নীরবে সহ্য করছে এবং আমরা বখাটেদের অভিভাবকদের ডেকে সমঝোতা করে দেই। যারা একেবারে বেপরোয়া তাদের জন্য কালেভদ্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। নারী শিক্ষাকে নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজরদারি অবশ্যই বৃদ্ধি করতে হবে। ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ, লাউতলী কলেজ অ্যান্ড স্কুল, খাজুরিয়া হাইস্কুল, লতিফগঞ্জ মাদ্রাসা, চান্দ্রা ইমাম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিরবাজার কলেজ, সোনালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ধানুয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় অতিমাত্রায় বখাটেদের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।
বখাটেদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকারের বিষয়ে শিক্ষাবিদ, সমাজপতি ও সচেতন মানুষ জানায়, পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন দুর্বল হয়ে পড়া ও এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ না থাকায় বিনোদন বঞ্চিত কিশোররা ধীরে ধীরে বখাটে হয়ে পড়ছে। তাছাড়া এ অঞ্চল প্রবাসীঅধ্যুষিত হওয়ায় পরিবারের পুরুষ অভিভাবকের অনুপস্থিতির সুযোগে নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরার কারণেই বখাটের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিকারের বিষয়ে পারিবারিক ও সামাজিক শাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো নজদারি বাড়াতে হবে। তাছাড়া এলাকাভিত্তিক বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পায়। মোবাইল ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহীদ হোসেন জানান, আমরা বখাটের বিষয়ে সংবাদ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে লিখিত অভিযোগের অভাবে প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।