টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রি পাড়ার শাহীন ক্যাডেট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পরিচালক হিসেবে কাজ করেন ফিরোজ আকন্দ নামে এক ব্যক্তি। এর মধ্যে নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে সম্প্রতি সরকারি চাকরি পান তিনি। তবে সরকারি অফিস ফাঁকি দিয়ে এখন স্কুল নিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকেন।
অভিযোগ রয়েছে, ইউপি সচিবকে ম্যানেজ করে ফিরোজ সপ্তাহে দুদিন দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদে হাজিরা দেন। সপ্তাহের বাকি দিন অফিসে না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
রেজিস্ট্রি পাড়ার শাহীন ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষকরা জানান, ফিরোজ সপ্তাহের বেশির ভাগ দিন স্কুলে থাকেন ও পাশেই প্রাইভেট পড়ান। স্কুলের হাজিরা খাতা দেখলেই তা প্রমাণ হবে।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, ফিরোজের সরকারি চাকরি হলেও সরকারি দায়িত্ব বাদ দিয়ে তিনি প্রতিনিয়ত স্কুলে ক্লাস ও প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ক্লাস নিচ্ছেন ফিরোজ।
গত সোমবার দুপুরে শহরের রেজিস্ট্রি পাড়া গিয়ে ফিরোজ মিয়াকে একটি কক্ষের মধ্যে প্রাইভেট পড়াতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি সটকে পড়েন।
শাহীন ক্যাডেট স্কুলের উপাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন মনি বলেন, ফিরোজ পঞ্চম শ্রেণির কিছু ক্লাস নেন।
দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, তিনি প্রতিদিনই আসেন। সপ্তাহে দু-এক দিন আসেন না।
এ ব্যাপারে মো. ফিরোজ বলেন, ‘দপ্তিয়র ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ভালো নয়। এ ছাড়া সারা দিন অফিসে কোনো কাজ নেই। তাই একদিকে যাওয়া-আসার কষ্ট, আরেক দিকে কাজ না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করি।’
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও হিসাব সহকারী-কাম কম্পিউটার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১৬ জুলাই লিখিত এবং ১৭ জুলাই ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে সচিব পদে ১২ ও হিসাব সহকারী-কাম কম্পিউটার পদে মো. ফিরোজসহ তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ সরকারি দায়িত্ব পালনে ফাঁকি দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’