স্কুলছাত্রীর বয়স বাড়িয়ে বিয়ে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান! - Dainikshiksha

স্কুলছাত্রীর বয়স বাড়িয়ে বিয়ে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর জন্ম সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। আর এতে মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। বিয়ের পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বরকে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করেছেন বরের মামা আলমগীর হোসেন। এ ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নে। ঘটনার পর এলাকাজুড়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় জয়মনিরহাট ইউনিয়নের ছোট খাটামারী গ্রামের মহির উদ্দিনের
বাড়িতে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ভূরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বদরুজ্জামান সাবুকে। ওই বাড়ির দশম শ্রেণির ছাত্রী হিরা খাতুনের সঙ্গে প্রেমের অভিযোগ তুলে তাকে আটক করে রাখা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, মেম্বার সিদ্দিকসহ মাতবররা মিলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। জয়মনিরহাটের শহীদ লে. সামাদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হীরা খাতুনের নাম ও জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ছাত্রীর বয়স বাড়িয়ে চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে পরদিন জোর করে বিয়ে দেওয়া হয় হীরা ও সাবুর।
সাবুর পরিবারের অভিযোগ, ইলেকট্রিকের কাজ করত সাবু। ওইদিন মোবাইল ফোনে ইলেকট্রিক কাজের কথা বলে ডেকে আটকের পর তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে নিখোঁজ সে। সাবুর বাবা আ. বারিক বলেন, ছেলে সারাদিন সঙ্গে ছিল। সন্ধ্যায় ফোন আসার পর বলে, একটা কাজ আছে- যাই। কিছুক্ষণ পর সিদ্দিক মেম্বার ফোন করে বলে এ ঘটনা। সাবুর মা কোহিনুর বেগম বলেন, তারা অভিভাবক সেজে বিয়ে দিল। তার স্বজনদের অভিযোগ, সাবুকে উদ্ধারে পুলিশ ও ইউএনও সহযোগিতা করেননি। স্বয়ং ইউপি চেয়ারম্যান হীরা খাতুনের নাম মোহছেনা করে বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ তৈরি করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করেছেন।
সংশ্নিষ্ট ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত কাজি নিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রির নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কাজি আনা হয়। স্থানীয় কাজিকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।

জয়মনিরহাটের শহীদ লে. সামাদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে জেএসসি পাস করে হীরা। জেএসসি সনদে নাম হীরা খাতুন, পিতা মহির উদ্দিন, মাতা জহুরা বেগম ও জন্ম তারিখ ২৫ জুলাই ২০০১ থাকলেও বিয়ের দিনের জন্ম সনদে জন্ম তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯। শহীদ লে. সামাদনগর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজীম উদ্দিন বলেন, মোহছিনা বেগম নামে তার বিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রী নেই।

পালিয়ে যাওয়ায় ইউপি সদস্য সিদ্দিকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জয়মনিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অনেক কিছুই আমাদের করতে হয়। মেয়েটির বিষয় বিবেচনা করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সামাজিক প্রেক্ষাপট ভেবে ইউএনওকে জানিয়ে করা হয়েছে। এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে বলেন, আমার যা ইচ্ছে হয়েছে তাই করেছি। আমার কিছুই হবে না।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএইচএম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী বলেন, বাল্যবিয়ে সমর্থনযোগ্য নয়। চেয়ার্মযান সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আমার সরকারি মোবাইল ফোনে ঘটনাটি বললে তাকে বলি, কোনোভাবে বাল্যবিয়ে দেওয়া যাবে না। যদি বিয়ে দিতে চান তাহলে কোর্টে আবেদন করে অনুমতি নিয়ে বিয়ে দিতে পারেন। সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, জন্ম সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এ কাজ করলে জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038337707519531