সরকারি কলেজগুলোেত শিক্ষক সঙ্কট কাটাতে স্পেশাল বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশিন।
গত দশ বছরে দুইবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আটকে যায়। শিক্ষা ক্যাডারের জন্য সর্বশেষ ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রভাষক নিয়োগ করা হয় বিশেষ বিসিএসে।
২৬তম ওই বিশেষ বিসিএসে ১ হাজার ৪৭ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর সাধারণ বিসিএসের সঙ্গে শিক্ষা ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষার জন্য আলাদা বিসিএস নেওয়া হয়নি।
অথচ শিক্ষা ক্যাডারের হাজার হাজার শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্টরা দফায় দফায় বিশেষ বিসিএস আয়োজনের সুপারিশ করে।
গত বছর ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর ‘জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি’ গঠন করে সরকার। এ কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
ছয় সদস্যের এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ কমিটি গত মাসে দফায় দফায় বৈঠক করে বিশেষ বিসিএসের সুপারিশ করে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরুরি চাহিদার প্রেক্ষিতে ৬৮৩ জন প্রভাষক নিয়োগ দিতে বিশেষ বিসিএসের আয়োজন করতে বলা হয়েছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি)। দ্রুততম সময়ে এ বিসিএস আয়োজন করা হবে।’
শিক্ষা ক্যাডারে হাজার হাজার শূন্য পদ থাকার পরও মাত্র ৬৮৩ জনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা কেন জানতে চাইলে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ক্যাডার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া জরুরি ও প্রয়োজনীয় সংখ্যাকেই এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষার বিশেষ বিসিএসের চাহিদা পাওয়ার পর তা নিয়ে কাজ শুরু করেছে পিএসসি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ কয়েকটি বিসিএস নিয়ে নানা জটিলতা থাকলেও শিক্ষার এ বিশেষ বিসিএস নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারি কলেজে গড়ে ২৫ শতাংশ শিক্ষক নেই। বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে শিক্ষক সংকটে ক্লাস নেওয়াটাই কঠিন।
শিক্ষার্থী নেই শুধু পরীক্ষার্থী। শিক্ষক সংকটে ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিও বাড়ছে। তারা শুধু পরীক্ষা দিতে আসেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ৬৬৩টি সরকারি কলেজ আছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক গত দশ বছরে সরকারিকরণ করা হয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরকারি কলেজের পুরো সুফল এখন ভোগ করতে পারছেন না।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, গত দশ বছরে কয়েকবার শিক্ষার জন্য বিশেষ বিসিএস আয়োজনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সফল হওয়া যায়নি। এখানে আন্তঃক্যাডার দ্বন্দ্বও একটি কারণ।