ছুটি ছাড়াই দীর্ঘ আট মাস ধরে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ওমর ফারুক স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে ব্যাহত হচ্ছে স্কুলের পাঠদান। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা বলে জানান অভিভাবকরা।
জানা যায়, ওমর ফারুক উপজেলার টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ আমলে গাজীপুর তিন আসনের এমপির সঙ্গে তার ছিল গভীর সখ্য। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আত্মসাৎ করেছেন স্কুলের ফান্ড, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের টাকা।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এ ছাড়া অন্য পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ থেকে তিনি স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলা রুজু হয়। নানা অভিযোগে মামলার জালে আটকা ওমর ফারুক গত আট মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্কুলের পাঠদান ও স্বাভাবিক কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছালমা বেগম বলেন, তিনি স্কুল ফান্ডের দুই লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে আছেন নিরাপদে। অপর শিক্ষক আ. মজিদ বলেন, শুনেছি তিনি অসুস্থ। স্কুলে তার ছুটির কোনো প্রমাণ নেই।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইয়াসমীন বলেন, প্রথমে তিনি দুই-তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন। পরে কীভাবে স্কুলে অনুপস্থিত তা জানা নেই। তার ছুটির কোনো প্রমাণও নেই।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ওমর ফারুকের মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) ও স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মনিরা খাতুন বলেন, প্রধান শিক্ষক চিকিৎসা ছুটিতে আছেন। কত দিন ছুটি নিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জানা নেই। বেতন-ভাতা পাচ্ছেন কিনা এ বিষয়ে বলেন, এটি প্রাথামিক শিক্ষা অফিসার বলতে পারবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) ফাতেমা নাছরিন জানান, ওমর ফারুক চিকিৎসা ছুটিতে আছেন। তার অসুস্থতার বিষয়টি সন্দেহজনক।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের কাছে চিঠি লিখে ডাক্তারি মতামত চাওয়া হবে। কত দিনের ছুটিতে আছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এটি না দেখে বলতে পারব না। তার বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভূঁইয়া জানান, ওই শিক্ষকের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এমন কিছু হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।