ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ৪৪৩ জন অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে তদন্তে নামছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়। গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) এ কে এম মাসুদুজ্জামান অভিযোগ তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট দুই শিক্ষক ড. ফারহানা খানম এবং মুশতারী সুলতানার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে নির্ধারিত সময়ের পরে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে গভর্নিং বডির দুজন শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্যের বিষয়ে তদন্ত পরিচালিত হবে। তদন্ত কার্যক্রমে ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম ও গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদারসহ সব সদস্যকে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়ার কাছে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
২০১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে তদন্ত ও মামলার মধ্যেই চলতি বছর অক্টোবরে আরো সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতির কাছে নজরুল ইসলাম, মো. আমির হোসেন ও আব্দুর রহমান হাওলাদারসহ কয়েকজন অভিভাবক গত ২৩ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
২০১৯ শিক্ষাবর্ষে অতিরিক্ত ভর্তির অভিযোগে গভর্নিং বডির সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি ড. ফারহানা খানম ও মুশতারী সুলতানার এমপিও স্থগিতের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন ড. ফারহানা খানম। রিটের আদেশ অনুযায়ী, ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত ভর্তির সঙ্গে জড়িত দুই শিক্ষক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ভর্তির ঘটনায় ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এমপিও স্থগিতের নির্দেশও দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন হাসিনা বেগম। ওই রিট মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।
এ ছাড়া গত ৭ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সময় শিক্ষক প্রতিনিধি ফাতেমা জোহরা হক দুজন প্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও চাপের মুখে পড়ায় পরে আবার নম্বর কমিয়ে দেন। এসংক্রান্ত অভিযোগ যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মাজহারুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তিনি বিষয়টি পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এ বিষয় নিয়েও সমালোচনার মধ্যে পড়েছে ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ।