এক সময়ে তরুণরা অবসর কাটাতো বই পড়ে, মাঠে খেলে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আর সাংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতার এ সময়ে সে জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লেয়ার আননোউনস ব্যাটল গ্রাউন্ড বা পাবজিসহ বিভিন্ন অনলাইন ভিডিও গেম। এসব গেমে আসক্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার গ্রামগুলোতেও এসব অনলাইন ‘গেমাসক্তদের’ সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। মাদকাসক্তির মতো অনলাইন গেইম এ আসক্ত এসব শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
উপজেলার পৌরসদর, বরাটিয়া, উত্তরপাড়া, তারাকান্দি, ও হোসেন্দি গ্রামের কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঘরে বাইরে, মাঠের কোণে ,রাস্তার মোড়ে মোড়ে , এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও কাজ ফাঁকি দিয়েও অনলাইন গেম খেলায় মত্ত উঠতি বয়সের তরুণ শিক্ষার্থীরা। হাতে থাকা স্মার্টফোনের স্ক্রিনে দৃষ্টি রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা খেলে যাচ্ছে অনলাইন গেম। একটি স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ আর ডাটা প্যাক হলেই খেলা যায় এসব গেম। গেমাসক্ত তরুণরা প্রয়োজনীয় ডাটা প্যাক কিনতে চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
তারাকান্দি গ্রামের এক অভিভাবক নয়ন মিয়া (৫২) দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ছেলেটা পড়াশোনা বাদ দিয়ে রাত জেগে গেম খেলে সকাল ১১ টায় ঘুম থেকে উঠে। অন্য কোন কাজে মন নেই, মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। তাকে নিয়ে আর পারছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন শাহনাজ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ক্রমাগত এ গেমের প্রতি আসক্তির কারণে অন্য কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, স্মার্টফোনের স্ক্রিনের আলোতে চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে। বিচ্ছিন্নতা ভাব তৈরি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এ আসক্তিকে মনঃস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন দেশ গঠনের হাতিয়ার তরুণ সমাজ অনলাইন ভিডিও গেমে আসক্ত হয়ে বাস্তব জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে কাল্পনিক স্কোর বাড়াতে মগ্ন থাকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদ হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন,অনলাইন গেম খেলায় আসক্ত এসব শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারিবারিক অনুশাসন ও কাউন্সিলিংয়ের বিকল্প নেই।