করোনা অতিমারি শুরুর পর থেকে কোনো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি, জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-মাদরাসা তো বন্ধ রয়েছেই। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এ পরিস্থিতেতে অনলাইনে শ্রেণি পরীক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার সম্ভব কি-না তা খতিয়ে দেখছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, গত বছর আগস্টে অনুষ্ঠিত জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০১৮-এর আওতায় গৃহীত কর্মপরিকল্পনাসমূহের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটির এক সভায় অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও এটুআইকে যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়। তারপর গত বছরের নভেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয় ও বুয়েটসহ পাঁচটি সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত কমিটির একাধিক বৈঠক করে অনলাইনে পরীক্ষার সমস্যা ও সম্ভাবনাসহ প্রতিবেদন পেশ করে। সেই প্রতিবেদন পযালোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৪ মার্চ সভা করে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অনলাইনে পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শুধু পাবলিক পরীক্ষাই নয়, অনলাইনে বিভিন্ন শ্রেণির সাময়িক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ও সরকারের চিন্তায় আছে। অনলাইনে পাবলিক পরীক্ষা ও বিভিন্ন শ্রেণিভিত্তিক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েরর শ্রেণি পরীক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সুপারিশ করতে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে। কমিটিতে মাধ্যমিক ওউচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, যশোর বোর্ডের প্রতিনিধিসহ দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, এ কমিটি দেশে ও বিদেশে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের বর্তমান প্রাকটিসগুলো পর্যালোচনা করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী রোডম্যাপ তৈরি করবে। চলতি মাসেই কমিটিকে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারেননি বলেও অভিযোগ করছেন। এ পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে ভাবছে সরকার।