অপরাধ প্রমাণ হলে বসুন্ধরা এমডির ১০ বছর জেল - দৈনিকশিক্ষা

অপরাধ প্রমাণ হলে বসুন্ধরা এমডির ১০ বছর জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিল্পপতি এবং বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর এখন আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার পলাতক আসামী। তার দেশত্যাগেও আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু মামলার পর দুইদিন চলে গেলেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। সায়েম সোবহানেরও দেশ ত্যাগের গুজব থাকলেও পুলিশ বলছে সে দেশেই আছে। আইনজীবীরা বলছেন, যে ধারায় মামলা হয়েছে তাতে সায়েম সোবহানকে গ্রেফতারে কোনো ওয়ারেন্টের প্রয়োজন নাই। সাধারণ কেউ হলে পুলিশ হয়ত গ্রেফতার করে ফেলত। 

সায়েম সোবহান আনভীর। ছবি : সংগৃহীত

এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। বুধবার মামলাটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ১৪ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। এর ফলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) জামিন আবেদনটির ওপর বিচারপতি মামুনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে।

আরও পড়ুন : দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

গত সোমবার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সায়েম সোবহান আনভীর ওই বাসায় আসা যাওয়া করতেন৷ মামলার এজাহারে নিহতের বড় বোন নুশরাত জাহান অভিযোগ করেছেন সায়েম সোবহানের সাথে মুনিয়ার সম্পর্ক ছিলো। সায়েম সোবহানই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন।

দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে৷ আর এই ধারায় বলা হয়েছে কাউকে যদি কেউ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড। এর সঙ্গে অর্থ দণ্ডও হতে পারে। সুপ্রিম কের্টের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু জানান, দন্ডবিধির ১০৭ ধারায় এই প্ররোচনার ব্যাখ্যা আছে। আর তা হলো, কোনো অপরাধমূলকাজে হুকুম দেয়া বা অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ করা, কোনো একটি অপরাধের ষড়যন্ত্র করা এবং কাউকে কোনো অপরাধ করতে ইচ্ছাকৃতভাকে সহায়তা করা।

দণ্ডবিধির ৩০৯ ধরায় কোনো ব্যক্তি যদি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাহলে তার শাস্তির বিধান আছে৷ সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড। এর সঙ্গে অর্থদণ্ডও হতে পারে।  তবে কেউ আত্মহত্যা করে ফেললে তাকে আর শাস্তির আওতায় আনার সুযোগ থাকে না।

দৈনিক শিক্ষা পরিবারের নতুন সদস্য ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

সুপ্রিম কোর্টের আরেকজন আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, ‘কোনো ব্যক্তিকে যদি এমনভাবে অপমান করা হয় বা চাপ প্রয়োগ করা হয় যা তাকে আত্মহত্যায় বাধ্য করে তাহলে সেটা প্ররোচনা হিসেবে গণ্য করা হবে।’

ইশরাত হাসান জানান,‘যদি কোনো নারী যৌন হয়রানি, সম্ভ্রমহানি ও ধর্ষণের শিকার হয়ে পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেন তাহলে এর বিচার হবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(ক) ধারায়৷ এখানেও সর্বোচ্চ শান্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু সর্বনিম্ন শাস্তি পাঁচ বছরের কম কারাদণ্ড হতে পারবেনা।”

আইনজীবীরা বলছেন,মামলাটি আত্মহত্যার প্ররোচনার না হয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হতে পারত। কারণ এটা আত্মহত্যা না হয়ে হত্যাও তো হতে পারে৷ তাই ময়নাতদন্ত ,ফরেনসিক প্রতিবেদন ও ভিসেরা প্রতিবেদন দেখে সিদান্ত নেয়া যেত এটা হত্যা না আত্মহত্যা। আর তখন আত্মহত্যা হলে প্ররোচনার বিষয়টি এমনিতেই আসত।

মামলার এজাহারটি কৌশলে দুর্বল করা হয়েছে বলে মনে করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।

কিন্তু ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী দাবি করেন,‘আত্মহত্যা ও প্ররোচনার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় ওই মামলা নেয়া হয়েছে। তবে ভিসেরা, ময়নাতদন্ত  ও সুরতহাল মিলিয়ে হত্যা প্রমাণ হলে চার্জশিটে ধারা পরিবর্তন করে হত্যা মামলায় রূপান্তর করা যাবে। আইনে কোনো বাধা নেই৷’

সায়েম সেবহানকে গ্রেফতারে আইনে কেনো বাধা নেই স্বীকার করে তিনি বলেন,‘আমরা চাচ্ছি শক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে। আমরা সে কাজ করছি। তাই সময় নেয়া হচ্ছে। মুনিয়ার ছয়টি ডায়েরি পেয়েছি। তার ইলেকট্রনিক ডিভাইস, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ছবিসহ আরও অনেক আলামত আছে আমাদের হাতে৷ আর তার বাসা ভাড়া এক লাখ টাকা কে দিত? সব মিলিয়ে সে কেন আত্মহত্যায় বাধ্য হয়েছে তা আমরা নিশ্চিত হতে চাচ্ছি। 

সায়েম সোবহান যদি দেশের বাইরে পালিয়ে যান? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সব কিছু চেক করে দেখছি তিনি দেশেই আছেন৷ আশা করি পালাতে পারবেন না।’ 

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় কারুর কোনো অপরাধ থাকলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’ 

সায়েম সোবহান বা তার পক্ষ থেকে কেউ এখনও এই বিষয় নিয়ে মুখ খোলেননি।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041720867156982