ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ পাঁচ আসামীর ডেথ রেফারেন্স ও মামলার সব নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি বলেন, ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত থেকে আজ অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও মামলার প্রয়োজনীয় নথিসমূহ হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে।
নিয়মানুযায়ী কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের আগে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এটিই ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। ডেথ রেফারেন্সের সাথে সাথে বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করে থাকেন।
ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ ৫ আসামীকে ফাঁসির সাজা ও আরেক আসামী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া মামলায় মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা চলার সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ। ওই ঘটনায় অভিজিতের বাবা প্রয়াত অধ্যাপক ড. অজয় রায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। ছেলে হত্যার বিচারের আশায় অসুস্থ শরীরে হুইল চেয়ারে বসে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবর আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন। এর দেড় মাসের মাথায় ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। দেখে যেতে পারলেন না ছেলে হত্যার বিচার।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (পরিদর্শক) মো. মনিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১ আগস্ট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবর অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত ২১ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।