অর্থ বরাদ্দ থামিয়ে দেয়ায় ভারতের উত্তরপ্রদেশে বিপাকে মাদরাসা শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

অর্থ বরাদ্দ থামিয়ে দেয়ায় ভারতের উত্তরপ্রদেশে বিপাকে মাদরাসা শিক্ষকরা

দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক : ভৌগলিক ও জনসংখ্যার দিক থেকে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশের রাজ্যসরকার মাদরাসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থ বরাদ্দ থামিয়ে দেয়ায় বেতন বন্ধ হয়ে এসব ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাজার হাজার শিক্ষকের। রাজ্যটির বিভিন্ন মাদরাসার ২১ হাজারেরও বেশি শিক্ষক চাকরি ছাড়ার পথে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জাভেদ বলেন, ‘শিগগিরই রাজ্যের বিভিন্ন মাদরাসার ২১ হাজারেরও বেশি শিক্ষককে চাকরি ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিতে হবে। রাজ্যের মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় এটা একটি বড় আঘাত।’

প্রসঙ্গত, ২০০৯-১০ খ্রিষ্টাব্দে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যসরকারে আসীন তৎকালীন কংগ্রেস সরকার রাজ্যটিতে ‘স্কিম ফর প্রোভাইডিং কোয়ালিটি এডুকেশন ইন মাদরাসাস’ নামের একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করেছিল। পরে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সেই প্রকল্পের তহবিলে আরও ৩০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৯৬ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৭২ টাকা) যোগ করেছিল তৎকালীন বিজেপি সরকার। প্রকল্পটি চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৭০ হাজারেরও বেশি মাদরাসা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে থাকা একটি সরকারি নথির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ এবং ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর প্রকল্পটিতে অর্থবরাদ্দ বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু তা অনুমোদন করেনি কেন্দ্রীয় সরকর।

পরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরের পর থেকে থেকে প্রকল্পটির তহবিলে অর্থবরাদ্দ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে বিপদে পড়েছে অনেক মাঝারি ও ছোটো মাদরাসা। এসব মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকদের বেতন-ভাতার একটি বড় অংশ আসত  ‘স্কিম ফর প্রোভাইডিং কোয়ালিটি এডুকেশন ইন মাদরাসাস’ প্রকল্পটি থেকে।

জাভেদ জানান, কয়েক মাস আগে তিনি উত্তরপ্রদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরেই প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যসরকার তার শিক্ষাবাজেট থেকে কিছু অর্থ বরাদ্দ করায় এখনও মাদরাসাগুলো কোনো রকমে টিকে রয়েছে— তবে শিক্ষকদের বেতন কমে গেছে কোথাও এক তৃতীয়াংশ, কোথাও বা এক চতুর্থাংশ।

উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, আগে যেখানে মাদরাসার একজন জুনিয়র শিক্ষক মূল বেতন পেতেন ১২ হা্জার রুপি, বর্তমানে তার বেতন নেমেছে ৩ হাজার রুপিতে।

রাজ্যের বাহরিচ জেলার মাদরাসা শিক্ষক সামিউল্লাহ খান রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা খুব বিপদে আছি। অন্য কোনো কাজ পাওয়াও আমাদের জন্য কঠিন। কারণ আমাদের বেশিরভাগই মাদরাসা শিক্ষকতা ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানি না।’

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ক প্যানেলের অন্যতম সদস্য শহীদ আখতার অবশ্য বলেছেন ‘স্কিম ফর প্রোভাইডিং কোয়ালিটি এডুকেশন ইন মাদরাসাস’ প্রকল্পটি ফের চালু করা উচিত।

‘এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রীও মনে করেন শিশুদের আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাও দেওয়া উচিত। এই প্রকল্পটি মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য উপকারী ছিল এবং এটি ফের চালু করা উচিত। এ ব্যাপারে আমি শিগগিরই সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব,’ রয়টার্সকে বলেন তিনি।

সূত্র : রয়টার্স

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031812191009521