অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের ফল দ্রুত প্রকাশের দাবি - দৈনিকশিক্ষা

অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের ফল দ্রুত প্রকাশের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ নিয়ে সৃষ্ট আইনি জটিলতা দূর হলেও এসব পদে নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা নিয়ে দেরি করার অভিযোগ উঠেছে এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে। মঙ্গল বা বুধবার অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ করা হবে বলে গত সোমবার সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানালেও মঙ্গলবার তারাই বলছেন, প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে, সময় লাগার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোন কর্মকর্তাই মন্তব্য করছেন না। যদিও প্রার্থীরা দ্রুত অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ করার দাবি জানিয়েছেন। প্রার্থীরা আশঙ্কা করছেন নিয়োগ সুপারিশের দেরি করে কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছেন। অহেতুক দেরি করার অভিযোগও এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে।   

জানা গেছে, মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতনদের সাথে এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বৈঠকে পদ সংরক্ষণের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা ২ হাজার ২৭০ পদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সে বৈঠক থেকে ফিরে এনটিআরসিএর কার্যালয়ে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। 

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

সভা শেষে দৈনিক শিক্ষাডটকমের সাথে কথা হয় এনটিআরসিএর সচিব এ টি এম মাহবুব-উল-করিমের সঙ্গে। তিনি  জানান, আজ বা কাল গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। ‘কিছু কাজের’ জন্য একটু সময় লাগছে।’ 

কবে নাগাদ ফল প্রকাশ করা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমের বলেন,  ‘আমরা দ্রুত ফল প্রকাশের জন্য চেষ্টা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফল প্রকাশ করা হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লিখিত নির্দেশনা চাওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। 

এদিকে কোনও কোনও কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলছেন, ১ থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষা উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়ে হাইকোর্টের যে আদেশ ছিল তা খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। সে রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে, মঙ্গলবার এনটিআরসিএর আইনজীবী ও এনটিআরসিএর কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে মন্তব্য করেছিলেন, যেহেতু আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে আদেশ ও রিট খারিজ করে বিষয়টি ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল তাই অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশে করতে আদেশের সার্টিফাইড কপির জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। 

এদিকে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ১৩তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ ২ হাজার ২৭০ প্রার্থীর নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিচারাধীন পদগুলো সংরক্ষিত রেখে অন্যান্য পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ করার নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, এনটিআরসিএর কেউ কেউ চাচ্ছেন ২ হাজার ২৭০ প্রার্থীকে অন্যান্য পদের সাথে নিয়োগ সুপারিশ করতে।  

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিচারাধীন ২ হাজার ২৭০ পদ সংরক্ষিত রেখে অন্যপদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশের পরিকল্পনা ছিল এনটিআরসিএর। এ বিষয়টি নিয়ে নতুন কোন সিদ্ধান্ত আছে কিনা তা জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব এ টি এম মাহবুব-উল-করিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছিনা’।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৩ নিবন্ধন পরীক্ষা উত্তীর্ণ এ ২ হাজার ২৭০ প্রার্থীকে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিল আপিল বিভাগ। কিন্তু আপিল বিভাগের রায় চ্যালেঞ্জ করে তা রিভিউ আবেদন করেছিল এনটিআরসিএ। এ পরিস্থিতিতে বিচারাধীন অবস্থায় এ পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ করার কোন সুযোগ নেই। তবে, আপিল বিভাগের রায় রিভিউ করার পরে এ ২ হাজার ২৭০টি সংরক্ষিত পদে নিয়োগ সুপারিশ করার জন্য কয়েকজন কর্মকর্তা উঠে পড়ে লেগেছেন। তারা চাচ্ছেন সাধারণ প্রার্থীদের সাথেই এ সংরক্ষিত পদগুলোতে রিটকারী প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করতে। তাই নানা অযুহাতে গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ বিলম্বিত করা হচ্ছে। 

গতকাল মঙ্গলবার থেকেই গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদেন করা প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করার প্রস্তুতি শুরু করেছে এনটিআরসিএ। চলতি সপ্তাহেই গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন কর্মকর্তারা। তবে, এখন তারা বলছেন ফল প্রকাশে কিছুটা সময় লাগবে। এ খবরে ক্ষুব্ধ নিবন্ধিত প্রার্থীরা। তারা দ্রুত ফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। 

নিবন্ধিত প্রার্থীদের নেতা শান্ত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা সাধারণ প্রার্থীরা দ্রুত ফল চাই। আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে গণবিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। নিবন্ধিত প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশের জন্য আবেদন করেছে। মে মাসের শেষে ফল প্রকাশে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। নানা অযুহাতে তা দেরি করেছে এনটিআরসিএ। তখন আইনি জটিলতার কথা বলা হচ্ছিল। কিন্তু সে জটিলতা দূর হয়েছে। এখনো কেন আমাদের নিয়োগ সুপারিশ করছেনা তা বুঝতে পারছি না। 

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই মেধারভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ। রিট করে কেউ নিয়োগ সুপারিশ পাবে সেটা উচিত না। আপিল বিভাগও মেধারভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ করার ওপর জোর দিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, নিবন্ধিত দেয়ার নিয়োগ সুপারিশের উছিলায় কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চান তাহলে তা হবে ন্যাক্কারজনক। নিবন্ধিত প্রার্থীদের নেতা হাবিবুল্লাহ রাজুও একই কথা বলেছেন।   

যদিও ১৩ তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়ে রিট করে আপিল বিভাগের রায় পাওয়া প্রার্থীরা বলছেন, তারা ১৩তম নিবন্ধনে নতুন নিয়মে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা প্রজ্ঞাপনের আলোকে তাদের নিয়োগ দিতে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছে। তাই তাদের নিয়োগ যৌক্তিক। যদিও তাদের বিষয়ে করা রায়টি রিভিউ করেছিল এনটিআরসিএ। 

তৃতীয় দফায় ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে ৮৯ লাখের বেশি আবেদন গ্রহণ করেছে এনটিআরসিএ। এ ৫৪ হাজার ৩০৪টি পদের মধ্যে ৪৮ হাজার ১৯৯ টি এমপিওভুক্ত শূন্যপদ। ননএমপিও পদ আছ ৬ হাজার ১০৫ টি। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ টি এমপিও পদে রিট মামলায় অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067272186279297