অস্ট্রেলিয়ায় সেরা শিক্ষার্থী বাংলাদেশের রুবাইয়াত - দৈনিকশিক্ষা

অস্ট্রেলিয়ায় সেরা শিক্ষার্থী বাংলাদেশের রুবাইয়াত

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

অস্ট্রেলিয়ায় সেরা বিদেশি শিক্ষার্থীর খেতাব পেয়েছেন চট্টগ্রামের মেয়ে রুবাইয়াৎ সরওয়ার ওরফে শান্তা। অর্জন করেছেন ‘শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল শিক্ষার্থীর পুরস্কার’। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে।

অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিকস বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন রুবাইয়াৎ। অ্যাওয়ার্ড নিয়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে সেখানে পড়তে যান তিনি। স্নাতকোত্তরে এখন পর্যন্ত সব কোর্সে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর তাঁর। পুরস্কার হিসেবে জিতে নিয়েছেন ‘গভর্নর অব সাউথ অস্ট্রেলিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২০’।

পুরস্কার আরও আছে রুবাইয়াতের ঝুলিতে। গত অক্টোবরে গৃহহীন মানুষের কষ্ট আর তাদের জীবন–জীবিকা নিয়ে অনলাইনে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সেখানকার ডন ডানস্টেন ফাউন্ডেশন। প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের লেখা, আঁকা ও তোলা ছবির মাধ্যমে নিজের ভাবনা তুলে ধরতে হয়। সেখানেও বাজিমাত করেন রুবাইয়াৎ।

একজন গৃহহীন মানুষের বর্তমান রূপ এবং ২০ বছর পরের রূপ ছবি আঁকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন তিনি। জিতে নেন সবচেয়ে সৃজনশীল প্রতিযোগীর পুরস্কার।

নেতৃত্বেও পিছিয়ে নেই তিনি। সাতটি দেশের শিক্ষার্থীদের হারিয়ে নির্বাচিত হন ‘ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অফিসার’ হিসেবে। কয়েক হাজার ভোটে জয়ী হয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক কাজ করার শপথও নিয়েছেন এরই মধ্যে।

রুবাইয়াতের ডাকনাম শান্তা। বড় হয়েছেন পাহাড় আর সমুদ্রের নগর চট্টগ্রামে। ড. খাস্তগির সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, ঢাকার টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে তিনি পৌঁছে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

রুবাইয়াৎ জানান, সাংগঠনিক কাজকর্ম করার প্রতি ঝোঁক তাঁর। এর শুরুটা হয়েছিল ‘দৃষ্টি চট্টগ্রাম’ নামের এক সংগঠনের হাত ধরে। সেখানেই তিনি শিখে নেন কীভাবে মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়। আরও শিখে নেন দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার কৌশল। সময়ের কাজ সময়ে করার মন্ত্র। সেই মন্ত্রই কাজে লাগিয়ে সফলতার খোঁজ করছেন এখন।

আগেই বলা হয়েছে, অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। বিতর্ক, গান, ছবি আঁকার মাধ্যমে সেসব পুরস্কার ঘরে তুলেছেন রুবাইয়াৎ। টিআইবি আন্তকলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন, প্রথম আলো আন্তকলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেরা বিতার্কিক ও চ্যাম্পিয়ন, দৃষ্টি আন্তক্লাব বিতর্ক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন; আরও কত কী। সব পুরস্কারই সংগ্রহে রেখেছেন এখনো।

রুবাইয়াত এখন আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। ফেসবুক মেসেঞ্জারে তিনি বলেন, স্কুলের বন্ধু, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ঘনিষ্ঠজনেরা প্রতি মুহূর্তে তাঁকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। মূলত স্বামী আরিফ আহমেদসহ পরিবারের সবার অনুপ্রেরণাতেই দেশের বাইরে তাঁর পড়তে যাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তিনি স্বপ্নের ডানায় চড়ে উড়ে বেড়াতে চান।

অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ড বৃত্তিটি দেয় সে দেশের সরকার। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিশেষসংখ্যক সরকারি–বেসরকারি কর্মজীবী এই বৃত্তির আওতায় পড়তে যান। রুবাইয়াৎ বলেন, ‘করোনায় অস্ট্রেলিয়াতে অন্য রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি থাকি এডিলেডে। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানও হয় অনলাইনে। এডিলেডের সময়গুলো খারাপ কাটছে না। অবশ্য করোনার কারণে খুব বেশি ঘোরাঘুরি করতে পারছি না। মহামারি গেলে সব শহর ঘুরে দেখার ইচ্ছা আছে। কারণ, আমি ভ্রমণপ্রেমী। দেশে থাকতেও নানা শহর ঘুরে বেড়াতাম। পাহাড়ে যেতাম, সমুদ্রে যেতাম। সময় করে বন্ধুদের সঙ্গে বের হয়ে পড়তাম।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ভ্রমণ মানুষের চোখ খুলে দেয়। জানার পরিধি বাড়ায়। আর মানুষ বড় বৈচিত্র্যময়। কত রকমের মানুষ যে দুনিয়াজুড়ে আছে। তাদের কাছে গেলে ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা হয়।’

কর্মজীবনের শুরুতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্প, পরবর্তীকালে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাজের সুবাদে দেশের অর্থনীতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে তাঁর। বলছিলেন, ‘একটা উন্নয়নশীল দেশের জনগণ হওয়ায় বড় সম্ভাবনা আছে আমাদের৷ সেটা হলো, সমস্যা কতটা গুরুতর হতে পারে, সেটা নিজের চোখে দেখা আর সেই সমস্যা নিয়ে কাজ করতে করতে সমাধান বের করা। এই সুযোগ কিন্তু উন্নত দেশের ছেলেমেয়েদের নেই। দেশের ভালো ইমেজের একটা অংশ হতে চাই নিজের উন্নয়নের মাধ্যমে।’

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003432035446167