অ্যাক্রেডিটেশন সনদ নিতে হবে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে - দৈনিকশিক্ষা

অ্যাক্রেডিটেশন সনদ নিতে হবে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের উচ্চশিক্ষায় আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সরকারি ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আসা হচ্ছে একটি কাঠামোর মধ্যে। নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে শর্ত পূরণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হবে একটি স্কোর। এই স্কোরেই নির্ধারিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান। ৭০ শতাংশ বা তার বেশি স্কোর পেলে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হবে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ। এই স্কোরের নিচে পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘গুণগত মান’ থাকার এই সনদ পাবে না। আগামী ২০ জুলাই রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বুধবার (২২ ‍জুন) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অ্যাক্রেডিটেশনের শর্ত পূরণ করে সনদ পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একদিকে যেমন শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত হবে, একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র‌্যাংকিংয়েও এগিয়ে থাকবে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আর উচ্চশিক্ষা স্তরে পাঠদান করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন কাঠামোর মধ্যে আনলে দায়সারা পাঠদান করে সার্টিফিকেট দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। তাদের দিক থেকে শিক্ষার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাধ্য হয়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মত শিক্ষা দেবে।

তথ্যমতে, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (বিএসি) আইন ২০১৭ অনুসরণ করে ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে অ্যাক্রেডিটেশন বিধিমালা ২০২১। এই বিধিমালা মেনেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া হবে অ্যাক্রেডিটেশন। অ্যাক্রেডিটেশন বিধিমালা অনুযায়ী, নির্ধারিত স্কোরের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি স্কোর পেলে কোন প্রোগ্রাম বা বিশ্ববিদ্যালয়কে   অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। ৬০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ স্কোর পেলে দেওয়া হবে কনফিডেন্স সার্টিফিকেট। তবে ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেলে কোনো সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না। কনফিডেন্স সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/একাডেমিক প্রোগ্রাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় অ্যাক্রেডিটেশন মানদণ্ড ও শর্তাবলি পূরণ করতে পারলে অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট পাবে।

অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেটের মেয়াদ ইস্যুর তারিখ হইতে পাঁচ বছর। নির্দিষ্ট সময় পর ফের এই সনদ নিতে হবে। তবে কনফিডেন্স সার্টিফিকেটের মেয়াদ ইস্যুর তারিখ হইতে সর্বোচ্চ এক বছর। কনফিডেন্স সার্টিফিকেট কোনোভাবেই নবায়ন করা যাবে না। অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট পাওয়া উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/একাডেমিক প্রোগ্রাম পরিচালনায় মানদণ্ড বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটালে কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটি নির্দিষ্ট কারণে অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট/ কনফিডেন্স সার্টিফিকেটের বৈধতা স্থগিত করতে পারবে।

জানা গেছে, অ্যাক্রেডিটেশন সনদ পেতে বিএসির নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। বিধিমালা অনুসরণে কাউন্সিল একটি অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি গঠন করবে। তিন সদস্যবিশিষ্ট বিএসির বিশেষজ্ঞ কমিটিতে একজন প্রধান ও দুজন সদস্য থাকবেন। একাডেমিক প্রোগ্রাম অ্যাক্রেডিটেশনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অধ্যাপক প্রোগ্রাম অ্যাক্রেডিটেশন কমিটির প্রধান হবেন।

একই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক কমিটির সদস্য হবেন। প্রতিষ্ঠান অ্যাক্রেডিটেশনের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কাজে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা এবং উচ্চ শিক্ষায় কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স বা অ্যাক্রেডিটেশন কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অধ্যাপক পদ মর্যাদার একজন শিক্ষক অ্যাক্রেডিটেশন কমিটির প্রধান হবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে আবেদন পাওয়ার পর কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করবে। পরিদর্শনকালে অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশকিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ করবে। এসবের মধ্যে রয়েছে- পাঠদান ও শিখন পদ্ধতি মূল্যায়ন ব্যবস্থা; অ্যাসাইনমেন্ট, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র পর্যালোচনা পদ্ধতি; গবেষণা পদ্ধতি; পাঠদানের পরিবেশ; বিভিন্ন সভার কার্যবিবরণী; কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের বিভিন্ন বিষয়; অ্যাক্রেডিটেশনের মানদণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরাজমান পরিস্থিতি ইত্যাদি। পরিদর্শন শেষে অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি কাউন্সিলের মানদণ্ড অনুযায়ী গুণগত মান নিরূপণ করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। কাউন্সিল সভায় অ্যাক্রেডিটেশন প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের (বিএসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন সনদ যথাযথ মানের স্বীকৃতি। যে কোর্স বা প্রোগ্রাম অথবা বিশ্ববিদ্যালয় এ স্বীকৃতি পাবে সেটির পড়াশোনা, পাঠদান পদ্ধতিও মানসম্মত বলে বিবেচিত হবে। দেশের উচ্চশিক্ষা সেক্টরকে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সিস্টেম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে আওতায় আনাই আমাদের উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, আমাদের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার মান ভালো নয়, এমন অভিযোগ শুনি হরহামেশাই। অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ায় আসার পর এমন অভিযোগ থেকে অনেকাংশেই মুক্তি পাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কারণ যারা মানসম্মত পাঠদান করবে না তারা অ্যাক্রেডিটেশন সনদও পাবে না। আর অ্যাক্রেডিটেশন সনদ না পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। কারণ, সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ফলে বাধ্য হয়েই পড়াশোনার মান উন্নত করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্রেডিটেশনের শর্ত পূরণ করলে তাদের মানও যেমন উন্নত হবে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র‌্যাংকিংয়েও এগিয়ে থাকবে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062439441680908