অ্যাসাইনমেন্ট বিক্রির প্রতিবাদে ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। অ্যাসাইনমেন্টগুলো শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ওয়েসবসাইটে দেয়া হচ্ছে। সেগুলোই ডাউনলাড করে টাকা আদায় করার অভিযোগ। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি পিয়ার হোসেন পেয়ারার ছেলে রবিউল করিমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ।
দ্বিতীয়দিনের মতো স্কুলটিতে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে সহস্র্রাদিক ছাত্র-ছাত্রী অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন বাবদ আদায়কৃত দেড়-থেকে দুশো টাকা ফেরতের দাবিতে এই সমাবেশ করে। তখন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহ আলমের মোটর সাইকেল ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা।
স্কুলের আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, করোনাকালে ছাত্র-ছাত্রীদের সংক্রামণের হাত থেকে রক্ষায় সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে আগামী বাৎসরিক পরীক্ষা বিকল্প পদ্ধতিতে নেবার জন্য স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র দিয়ে বাড়িতেই তা লিখে স্কুলে জমাদানের আহ্বান জানানো হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেলকুচির দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির প্রায় ১৮শ ছাত্র-ছাত্রীকে অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার ম-লের যোগসাজশে স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাজী পিয়ারার ছেলে রবিউল করিমের কিন্ডার হলি চাইল্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল থেকে এ প্রশ্ন দিয়ে দেড় থেকে দুশ টাকা করে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে আদায় করা হয়। তবে পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র ২ টাকায় প্রশ্ন দেয়ায় দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তখনও বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। অবস্থা বেগতিক দেখে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় প্রধান শিক্ষক ও অর্থ আদায়কারী রবিউল করিম টাকা ফেরতের ঘোষণা দেন।
রোববার সকালে ঘোষণা মোতাবেক হাতিয়ে নেয়া অর্থ ফেরত না দিলে উপস্থিত সহস্র্রাদিক ছাত্র-ছাত্রী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় শিক্ষক শাহ আলম ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর চড়াও হলে তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করা হয়। এরপর পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে টাকা ফেরত পায়নি শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে সভাপতির ছেলে রবিউল করিম জানান, আমি প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই প্রশ্ন বাবদ ৬০-৬৫ টাকা করে নিয়েছি। তবে এই টাকা ফেরত দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আর স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার ম-ল জানান, রবিউলকে আমি দায়িত্ব দেইনি প্রশ্ন বিক্রির জন্য। সে মিথ্যা বলেছে। তবে যে টাকা নেয়া হয়েছে আমরা তা ফিরিয়ে দেবার ঘোষণা দিয়েছি।
এদিকে অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন বিক্রির বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল্লাহ জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তা ক্ষতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।