বাংলাদেশে করোনা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় এরই মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষায় অটোপাস পাচ্ছেন সব পরীক্ষার্থী। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা হবে না সে সিদ্ধান্ত আগেই জানানো হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩০ দিনের সিলেবাসে মূল্যায়ন করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) জানিয়েছে, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এ ৩০ দিনের সিলেবাসে প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে সেই অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে স্কুলে জমা দেবে। এর ভিত্তিতেই তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এমনকি যাদের অনলাইন সুবিধা আছে তারা অনলাইনে অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া ও জমা দিতে পারবে।
যাদের নেই তাদের অভিভাবকরা শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অ্যাসাইনমেন্ট নেবেন ও জমা দেবেন। আর যারা করোনার কারণে অন্য এলাকায় চলে গেছেন, তারা তাদের কাছের স্কুল থেকে এ সুবিধা নিতে পারবেন। প্রয়োজন হলে সরাসরি মাউশি থেকেও অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া ও জমা দেয়া যাবে। কিন্তু বরিশালে এর চিত্র অন্য ধরনের। এখানে শিক্ষার্থীদের স্কুলে স্কুলে নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। যে কারণে ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে বা এ অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, সেটা মানছেন না শিক্ষকরা। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট বুঝিয়ে দিতে শিক্ষার্থী ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কাছে যে বকেয়া বেতন রয়েছে তা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে এ বেতন তোলা হচ্ছে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো বেতন নেয়া যাবে না, তা-ও সরকার বলেনি।
বরিশাল সদর উপজেলার একজন অভিভাবক গোলাম মোস্তফা মনে করেন, করোনায় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অনেক সময় পার করা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের তেমন সম্পৃক্ত করা যায়নি। কারণ একদিকে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব, অন্যদিকে ইন্টারনেট সুবিধা সবার না থাকা। এখন যে অ্যাসাইনমেন্টের কথা বলা হচ্ছে সেটা অনলাইনের চেয়ে ভালো। তবে এটা আরও অনেক আগে শুরু করলে ভালো হতো। কিন্তু এ অ্যাসাইনমেন্টের নামে স্কুলে শিক্ষার্থীদের আনা হচ্ছে। এনে তাদের কাছে স্কুলের বেতন, টিউশন ফি, সেশন চার্জ চাচ্ছে। আর সংসদ টেলিভিশন স্যাটেলাইট হওয়ায় এর মাধ্যমে যে পাঠদান করা হচ্ছে, তা-ও সবাই নিতে পারছে না। অবশেষে অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, অনলাইন থেকে অ্যাসাইনমেন্ট নিতে পারবে। তারপর সেটা না পারা গেলে স্কুল থেকে সংগ্রহ করবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে কেউ বাধ্য করতে পারবে না।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট নিতে প্রথমে অনলাইনে চেষ্টা করা হবে। এরপর অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট নিবে। তারপর এ দুই সুযোগ না থাকলে ছাত্রছাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবে। তাও স্কুলের গেটে, বা ক্লাস থেকে নিতে পারবে। তিনি বলেন, অর্থ আদায়ের জন্য যদি চাপ প্রয়োগ করা হয় তবে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।