আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন আল-জাজিরা - দৈনিকশিক্ষা

আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন আল-জাজিরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কাতার-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরায় বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ও তার ভাইদের নিয়ে প্রচারিত 'অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস মেন' নামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেদনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে আখ্যায়িত বলেছে। ঢাকায় হাই কোর্ট দেশের টেলিকম কর্তৃপক্ষকে আল জাজিরার প্রতিবেদন ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিতে আদেশ দিয়েছে। এই প্রতিবেদন ঘিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে বিবিসি বাংলার মাসুদ হাসান খান কথা বলেছেন অনুষ্ঠানের প্রযোজক উইলিয়াম থোর্ন-এর সাথে।

বিবিসি বাংলার সাথে সাক্ষাতকারে উইলিয়াম থোর্ন বলেছেন, প্রতিবেদনটি প্রচারের পর বাংলাদেশে যে ধরণের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং যেভাবে তাদের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

সাক্ষাতকারে আত্মপক্ষসমর্থন করে তিনি বলেছেন, তাদের ঐ প্রতিবেদনটি পেশাদার সাংবাদিকতার একটি ক্লাসিক উদাহরণ।

মি. থোর্ন বলেন, "আমরা আওয়ামী লীগ বা কোনো দলকে টার্গেট করে কাজটি করিনি। বরং ব্যাপক সময় নিয়ে, প্রাপ্ত তথ্য যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে এবং অকাট্য প্রামাণ্য দলিলের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিলো।"

সেনাপ্রধান ও তার ভাইদের নিয়ে করা প্রতিবেদনে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম এলো কেন, প্রতিবেদনটি প্রচারের পর বাংলাদেশে করা মামলা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন কি-না কিংবা আল জাজিরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করে কি-না এমন সব প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন তিনি।

'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন' নামের এই প্রতিবেদনটি গত ১লা ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রচারের পর থেকে এখন পর্যন্ত এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক চলছে।

প্রতিবেদনে কেন প্রধানমন্ত্রীর নাম
প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে যে সেনা প্রধানের দুই ভাই ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে তা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। আবার তার পলাতক ভাইয়েরা তার বাসায় অনুষ্ঠানে এসেছেন যেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও উপস্থিত ছিলেন। সেনাপ্রধান নিজেও বিদেশে ভাইদের বাসায় গেছেন।

কিন্তু এসব তথ্যের ভিত্তিতে করা প্রতিবেদনে এবং এর শিরোনামের সাথে প্রধানমন্ত্রীর নাম যুক্ত করা হলো কেন?

এমন প্রশ্নের জবাবে উইলিয়াম থোর্ন বলেন, "যখন আমরা অনুসন্ধান করছিলাম তখন এই ব্যাপারটা আরও বেশি করে স্পষ্ট হয় যে এসব কিছুর মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে।

"জেনারেল আজিজ তার রেকর্ড করা ফোনকলেও নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে তার তিন ভাই জোসেফ, হারিস এবং আনিস এরা সবাই ৯০-এর দশকে আওয়ামী লীগকে নিরাপত্তা দিয়েছে এবং সরাসরি শেখ হাসিনার সাথে কাজ করেছে। সেই সময়টাতে ঢাকা যখন শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য রাজনীতিকদের জন্য বিপজ্জনক ছিল, তখন তাদের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে এই তিনজন ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ।

"এবং এর পক্ষে যথেষ্ট ফটোগ্রাফিক তথ্য-প্রমাণ এবং সাক্ষীদের বক্তব্য আমাদের হাতে আছে।"

তিনি বলেন, জেনারেল আহমেদের তিন ভাই যারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের সরাসরি যোগসূত্র ছিলো প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেটা জেনারেল আজিজ নিজেই বলেছেন।

"এবং শেখ হাসিনাই জেনারেল আজিজকে সরাসরি নিজেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সেজন্য আমার কাছে শিরোনামটি যথাযথই মনে হয়েছে।"

আল জাজিরা কেন উদ্বিগ্ন
'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন' শীর্ষক প্রতিবেদনটির প্রযোজক জানিয়েছেন, যাদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়াটা তাদের উদ্বিগ্ন করছে।

"এক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে যারা কন্ট্রিবিউট করেছে তাদের বিরুদ্ধে। যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অবশ্যই গুরুতর। এখানে যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা সত্যকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে এটা (আইনগত পদক্ষেপ) একটি মারাত্মক চেষ্টা।"

সতেরোই ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট চার জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয় ঢাকার একটি আদালতে এবং আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি এ আবেদনের ওপর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

মামলার আবেদনে অভিযুক্তরা হলেন, ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরি প্রবাসী বাংলাদেশি জুলকারনাইন খান সামি এবং আল জাজিরার ডিরেক্টর জেনারেল ও প্রধান সম্পাদক মোস্তেফা স্যোয়াগ।

মি. থোর্ন বলেন, স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার ছাড়াও যাদের কাঁধে বিষয়টি চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তাদের পরিবারের বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।

"এটা একেবারেই কাম্য নয়। আমাদের মনে হচ্ছে এখানে পত্রবাহকের মুখ বন্ধ করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে যেসব তথ্য-প্রমাণ হাজির করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে কোন কার্যকর জবাব না খুঁজে বের করতে না পেরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হচ্ছে।"

আল জাজিরার প্রায় এক ঘণ্টার এই প্রতিবেদনে মূলত বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং তার তিন ভাই-এর কার্যক্রম দেখানো হয়েছে।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের আপন তিন ভাই ২০০৪ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হয়েছিল।

এই ভাইদের মধ্যে আনিস আহমেদ এবং হারিস আহমেদ বর্তমানে পলাতক রয়েছেন এবং তৃতীয় ভাই, তোফায়েল আহমেদ জোসেফ, যিনি হত্যার অপরাধে কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন।

মামলা থেকে অব্যাহতি ২০১৯ সালে
আন্তবাহিনী গণসংযোগ দফতর বা আইএসপিআর ১৫ই ফেব্রুয়ারি সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, আনিস এবং হারিস আহমেদ দু'জনই ''যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার'' মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন। পরের দিন ঢাকার প্রথম আলো পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়, আনিস এবং হারিস আহমেদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ২০১৯ সালের ২৮শে মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

মঙ্গলবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি দিনের পরের দিকে সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যখন তার ভাইদের সাথে দেখা করেন তার আগেই তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিলো।

ওদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

'প্রধানমন্ত্রী জানতেন কি-না তা জানিনা'

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাদের নিয়োগ দিয়েছেন তাদের কারও কাজের দায়িত্ব তিনি নেবেন কেন এবং যিনি নিজেও বলছেন যে তিনি কোনো আইন ভঙ্গ করেননি, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নাম আসবে কেন?

এমন প্রশ্নের জবাবে উইলিয়াম থোর্ন বলেন, " আমি বলবো এই তিন ভাইয়ের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে শেখ হাসিনা নিজে কতটুকু অবহিত, তা আমরা জানিনা। তার কোন প্রমাণও আমাদের হাতে নেই।"

তবে তিনি বলেন, জেনারেল আজিজ 'আইনের চোখে পলাতক' দু'জনের সাথে ষড়যন্ত্র বা যোগাযোগ করছেন, এবং তিনি হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।

''এটা সামরিক কর্মকর্তার জন্য পেশাগত অসদাচরণ।''

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে তিনি এমন একজনকে নিয়োগ করবেন যিনি ঐ পদের জন্য উপযুক্ত। এখানে শেখ হাসিনার সরাসরি দায়িত্বের ব্যাপার রয়েছে।

‍"আমার মনে হয় আমরা যথেষ্ট ষ্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি যে জেনারেল আজিজ ২০১৫-১৬ সালে দু'‌জন ফেরারি আসামীকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, বা করার ষড়যন্ত্র করেছেন। আমাদের হাতে প্রমাণ আছে ২০১৫-১৬ সালে জেনারেল আজিজ বুদাপেস্টে হারিছ আহমেদের সাথে দেখা করেছেন। আনিস আহমেদের সাথেও তার যোগাযোগ ছিল বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।আর এসবই ঘটেছে ২০১৯ সালের মার্চ মাসের সাজা মওকুফের সেই বিখ্যাত ঘটনার বেশ আগে।"

ভাইদের পলাতক বলা হলো কেন

আল জাজিরার প্রতিবেদন প্রচারের পর আত্মপক্ষ সমর্থন করে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, তিনি যখন তার ভাইদের সাথে দেখা করেছেন তার আগেই সরকার তার ভাইদের সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালও পরে তা নিশ্চিত করে বলেছেন যে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়াতেই তাদের সাজা মওকুফ করা হয়েছিলো।

তাহলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে তাদের পলাতক বলা হলো কেন - এমন প্রশ্নের জবাবে প্রযোজক উইলিয়াম থোর্ন বলেন, "আপনি সময়গুলো দেখুন। আপনি দেখুন ২০১৪-২০১৫ সাল। আমাদের হাতে স্পষ্ট প্রমাণ ছিলো যে জেনারেল আজিজ হারিছ আহমেদের জন্য সার্ভিং বিজিবি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে ভুয়া পাসপোর্ট পেতে সহায়তা করেছেন।"

"পুলিশের ওয়েবসাইটেও তার (আজিজ আহমেদ) ভাই তখন মোস্ট ওয়ান্টেড। যে সময় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির কথা বলা হচ্ছে ঘটনা তারও চার বছর আগের। জেনারেল আজিজ তার ভাইদের ভুয়া পাসপোর্ট পাওয়া ও ইউরোপে যেতে সহায়তা করেছেন। এবং বিশ্বজুড়ে যে সম্পদ তারা করেছেন কোনোভাবে যেটি সম্ভব হয়েছে কারণ তাদের ভাই বাংলাদেশের সেনাপ্রধান।"

ইসরায়েল নিয়ে বিতর্ক
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন নজরদারী করার প্রযুক্তি ইসরায়েল থেকে আমদানি করেছে।

তবে এ অভিযোগ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে।

সেনাবাহিনী থেকে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের জন্য নজরদারি যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়টি জেনারেল আজিজ আহমেদ সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব শুরুর আগেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো।

তাহলে প্রতিবেদনে এর সাথে আজিজ আহমেদের নাম জড়ানো হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মি. থোর্ন বলেন, ""হয়তো ক্রয় প্রক্রিয়া আগে শুরু হয়েছে, কিন্তু প্রতিবেদনে আমরা শুধু বলেছি ২০১৮ সালে জেনারেল আজিজ দায়িত্ব নেয়ার পর চুক্তিপত্রে সই হয়েছে।"

''প্রথম কথা হলো জাতিসংঘ মিশনের জন্য এমন বিতর্কিত স্পাইওয়্যার কখনই ব্যবহার করেব না। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদেরও তা ব্যবহার করতে দেবে না। শান্তিরক্ষা মিশনে এধরনের বিতর্কিত প্রযুক্তির ব্যবহার ‌স্ট্যান্ডার্ড ইস্যু না। এনিয়ে জাতিসংঘ যেমন প্রশ্ন তুলেছে, আমরাও তুলেছি।"

আল জাজিরা কি আওয়ামী লীগ বিরোধী?
প্রতিবেদনটি প্রচারের পর থেকে বাংলাদেশের সরকারি দলের সমর্থকরা আল জাজিরার বিরুদ্ধে জামায়াত ঘনিষ্ঠতা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছে।

এই অভিযোগ কতটা সত্যি জানতে চাইলে 'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন'-এর প্রযোজক উইলিয়াম থোর্ন বলেন, "আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি এ প্রতিবেদনে অনিয়মগুলো তুলে ধরা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলকে নিয়ে এর কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিলোনা।"

তিনি বলেন, "আমরা শুধু পেশাদার সাংবাদিকতা করেছি। এবং তথ্য-উপাত্তকে অনুসরণ করেছি এবং এই প্রতিবেদন এরই একটি ক্লাসিক উদাহরণ"।

মি. থোর্নের কাছে বিবিসি বাংলা জানতে চেয়েছিল, তারা যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে সেটি কি নিয়মিত অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, নাকি বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের এ ধরণের আইডিয়া সরবরাহ করেছে। অর্থাৎ এটা কোন পরিকল্পনার ফসল ছিল কি-না।

জবাবে তিনি বলেন, কোন পরিকল্পনা করে এটা করা হয়নি।

"মানুষের আগ্রহ আছে এমন বিষয়গুলো নিয়ে আমরা নিয়মিতভাবে গবেষণা করি। অনেক সময় ডকুমেন্ট, আইডিয়া ইত্যাদি লোকজন আমাদের দেয়। এই বিশেষ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে কিছু প্রমাণাদি তুলে দেয়া হয়েছিল। সেগুলো যাচাই করে আমাদের কাছে প্রমাণগুলো খুব শক্তিশালী বলে মনে হয়েছিল। এবং আমাদের মনে হয়েছিল এগুলো নিয়ে আরও গবেষণা দরকার। গোড়াতে আমরা বাংলাদেশকে টার্গেট করে অনুসন্ধান শুরু করিনি। সেটা আমাদের লক্ষ্যও ছিলোনা। কিন্তু যেসব তথ্য পেয়েছিলাম সেগুলোই আমাদের সেখানে নিয়ে গেছে।"

তিনি বলেন, হারিছ আহমেদকে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছিলো হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের সেনা প্রধানের ভাই যিনি পালিয়ে ছিলেন এবং এভাবেই একটি আরেকটির সাথে উঠে এসেছে।

"এটা কোনো পরিকল্পিত তদন্ত ছিলোনা তবে এটি ছিলো একটি তথ্যপ্রমাণ-নির্ভর অনুসন্ধান।"

কত অর্থ ব্যয় হয়েছে ডকুমেন্টারিটি বানাতে
প্রযোজক উইলিয়াম থোর্ন বিবিসি বাংলাকে জানান, কি পরিমাণ অর্থ তাদের ব্যয় হয়েছে তা নিয়ে তিনি কোন কথা বলবেন না। তবে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে একটি নির্ভুল ও প্রমাণ-ভিত্তিক একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে যা করা দরকার সেটিই তারা ব্যয় করেছেন।

"আমি বলতে পারি যে আমরা ভাগ্যবান যে যথেষ্ট অর্থ আমাদের ছিলো অনেক সময় ব্যয় করা, তথ্য চেক করা, প্রাপ্ত তথ্য দ্বিতীয়বার যাচাই করার জন্য। তাই যা দরকার প্রতিবেদনের জন্য সেটাই আমরা ব্যয় করেছি। আমরা সাংবাদিকতা করেছি যাতে অ্যাকুরেসি নিশ্চিত করা হয়। আমরা ভাগ্যবান যে এজন্য অনেক সময় আমরা হাতে পেয়েছি।"

তথ্যদাতা স্যামির প্রকৃত নাম কেন ব্যবহার করা হয়নি
'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন' প্রতিবেদনটিতে প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীকে 'স্যামি' নামে সম্বোধন করা হয়েছে কিন্তু তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

যদিও তিনি কথা বলেছেন সেখানে এবং নিজেকে গোপন করার চেষ্টা করেননি।

বরং তথ্য দিতে পেরে নিজের স্বস্তির কথাও বলেছেন তিনি।

তাহলে প্রতিবেদনে তার নাম পরিচয় দেয়া হলো না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে অনুষ্ঠানটির প্রযোজক বলেন, "এটা তার অনুরোধেই করা হয়েছে। এটা ঠিক যে প্রতিবেদনে তাকে খুশীই মনে হয়েছে কিন্তু তার নাম দেয়া হয়নি যা কিছুটা পরস্পরবিরোধী মনে হতে পারে। কিন্তু এটা তার সিদ্ধান্ত এবং আমরা সেটাকেই শ্রদ্ধা করেছি।"

ঢাকা অফিসের কারও ওপর চাপ আছে?
আল জাজিরা প্রতিবেদনটি প্রচারের পর বাংলাদেশে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সরকার ও সেনা সদর দপ্তর থেকে।

সে প্রেক্ষাপটেই জানতে চাওয়া হয়েছিলো যে আল জাজিরায় ঢাকায় কর্মরত কর্মীদের ওপর বা অফিসের কারও ওপর কোনো ধরণের চাপ তৈরি হয়েছে কি-না।

বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আমি এটা সরাসরি বলতে পারিনা। কিন্তু আগে এধরনের ঘটেছে যেখানে বাংলাদেশ নিয়ে স্টোরি ফাইল করার পর ঢাকার নিউজ টিম ডিজিএফআইয়ের চাপ ও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলো।"

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052471160888672